দুদিনের সফরে শুক্রবার (২১ জুন) ভারত সফরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২২ জুন) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন তিনি। সেই বৈঠকে উভয় রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ নবায়নকরণ নিয়ে আলোচনা হয়। এতে বেজায় চটেছে পশ্চিমবঙ্গে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
Advertisement
এই চুক্তির জেরে পশ্চিমবঙ্গে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা আরও জোরালো হচ্ছে বলে দাবি তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, পশ্চিমবঙ্গকে কিছু না জানিয়ে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবীকরণ করা হচ্ছে। আমরা এই চুক্তির অংশ। এছাড়া আগের চুক্তির যে পাওনা সেটাও আমাদের দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তার ওপর গঙ্গা ড্রেজিং বন্ধ হয়ে গেছে, যা বন্যা ও গঙ্গা ভাঙনের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশিদের জন্য ই-মেডিকেল ভিসা চালু করবে ভারত বাংলাদেশ-ভারত ১০ সমঝোতা স্মারক ও নথি সই তিস্তার পানি নিয়ে আলোচনায় ভারতের কারিগরি দল আসা খুবই ইতিবাচক: পররাষ্ট্রমন্ত্রীএ বিষয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী কেন্দ্রীয় সরকারকে একাধিকবার চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে মমতা লেখেন, গঙ্গা ভাঙনের অন্যতম কারণ ফারাক্কা ব্যারাজ। যার জেরে পশ্চিমবঙ্গের বিপুল সম্পদ, কৃষিজমি, মালদহের আম বাগান ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছে।
Advertisement
এদিকে, ২০২৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গার পানি চুক্তি হওয়ার বিষয়ে ভারতের খ্যাতিমান সাংবাদিক ও প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ার সভাপতি গৌতম লাহিড়ী বলেন, জ্যোতি বসুর সরকার যখন গঙ্গা চুক্তি করেছিলেন, তখনও মমতা আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু তাতে চুক্তি ঠেকানো যায়নি। যেহেতু পুরোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি কোনোভাবেই বাতিল করা সম্ভব নয়, তাই আমার মনে হয় ২০২৬ সালে চুক্তি নবায়ন নিয়ে মমতা আপত্তি করবেন না।
আরও পড়ুন:
কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে দুই বাংলাদেশি নিখোঁজ ভারতে বিষাক্ত মদপানে ৩৭ জনের মৃত্যু টাকা খরচের পথ পাচ্ছেন না দম্পতি, চান পরামর্শগৌতম লাহিড়ী আরও বলেন, মমতা ব্যানার্জী অভিজ্ঞ রাজনীতিক। তিস্তা চুক্তির ক্ষেত্রে শুরুতেই আপত্তি করেছিলেন তিনি, কিন্তু গঙ্গা চুক্তির সময় শুরুতে মমতা ছিলেন না। তাই মমতার বোঝা উচিত, গঙ্গা চুক্তির নবায়ন নিয়ে তার আপত্তি খুব একটা কার্যকর হবে না।
এদিকে, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শেখ হাসিনার একান্ত বৈঠকে আরও বেশকিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনায় বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে প্রতিরক্ষা, নির্মাণ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, দুই দেশের বাণিজ্য উন্নয়ন ও নদীর পানি বণ্টন সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
Advertisement
১৯৯৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট আমলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের গঙ্গা চুক্তি হয়, যার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালে। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা চুক্তির আর্টিকেল ১২ অনুযায়ী, দুই পক্ষের সম্মতিক্রমে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর কথা।
ডিডি/এসএএইচ