দেশজুড়ে

নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় উব্দাখালী নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কমলেও বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি।

Advertisement

এদিকে জেলার বারহাট্টা, পূর্বধলা এবং খালিয়াজুরিতে পানি কিছুটা বেড়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা। তবে এসব এলাকায় পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, কলমাকান্দায় পানি কিছুটা কমছে, তবে তা ধীরগতিতে। শনিবার (২২ জুন) দুপুরের দিকে কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আশা করা হচ্ছে, ভারী বৃষ্টি না হলে পানি আর বাড়বে না।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পাউবো সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার থেকে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বেড়ে যায়। এর মধ্যে কলমাকান্দায় উব্দাখালী নদীর পানি গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বিপৎসীমার ওপরে চলে যায়। এতে উপজেলার পোগলা, বড়খাপন, কৈলাটি, খারনৈসহ সাতটি ইউনিয়নেরই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। গত বুধবার রাত পর্যন্ত উব্দাখালী নদীর কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

Advertisement

পানি বেড়ে পোগলা ইউনিয়নের কালাকোনা, জীবনপুর, গোয়াতলা, কৈলাটি, মঙ্গলসিধ; কৈলাটি ইউনিয়নের খলা, চারালকোনা, বাবনীকোনা, সনুরা, কনুরা, সাকুয়া ইন্দ্রপুর, বেনুয়াসহ বড়খাপন ও কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। গ্রামীণ রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় স্থানীয় লোকজন যাতায়াতের ভোগান্তিতে পড়েন। গবাদিপশুর খাবার সংগ্রহ নিয়েও বিপাকে পড়তে হয়।

কৈলাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন বলেন, তার ইউনিয়নের বেনুয়া, খলা, চারালকোনা, সনুরা, সাকুয়া ইন্দ্রপুরসহ বেশ কিছু গ্রামে পানি ঢুকেছে। নিচু এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। তবে গতকাল রাত থেকে পানি কিছুটা কমছে। পানির কারণে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছিল। তবে বন্যা নিয়ে মানুষের মনে যে ভীতি সৃষ্টি হয়েছিল, এখন রোদ ওঠায় সেটা কেটেছে।

অপরদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ, জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ এবং ইউএনও আসাদুজ্জামান বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, বন্যায় উপজেলার মোড়-মুক্তিরচর, বাহাদুরকান্দা-বাসাউড়া, ঘোষপাড়া-হরিণধরা, কলমাকান্দা-বিশরপাশা পাকা রাস্তা, গোরস্থান-সাউদপাড়া, গজারমারী-খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদ, গোবিন্দপুর-রানীগাঁও কাঁচা রাস্তাসহ কয়েকটি সড়কের বিভিন্ন স্থান পানিতে তলিয়ে যায়। ধীরগতিতে হলেও পানি নেমে যাচ্ছে।

Advertisement

স্থানীয় সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহী বলেন, আমরা বন্যাকবলিত প্রতিটি এলাকায় গিয়েছি। মানুষের খোঁজখবর রাখছি। শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। কিছু পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

এইচ এম কামাল/এফএ/জিকেএস