কৃষি ও প্রকৃতি

যে সাপ অন্য সাপকে খেয়ে ফেলে

বিশ্বের অন্যতম বিষধর সাপের একটি ‘রাজ গোখরা’ বা ‘কিং কোবরা’। প্রকৃতির রাজ্যে একটি রহস্যময় এবং বিপন্ন প্রজাতিও বটে। বৈজ্ঞানিক নাম ‘অফিওফাগাস হ্যানা’। সাপটি তার বিশাল আকৃতি, তীব্র বিষ এবং অনন্য আচরণের জন্য পরিচিত।

Advertisement

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ঘন বনাঞ্চলে বসবাসকারী সাপটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলেও দেখা যায়। এদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভ্যাস এবং প্রজনন প্রক্রিয়া আমাদের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

রাজ গোখরার দৈর্ঘ সাধারণত ১০ থেকে ১৫ ফুটের মধ্যে হয়। তবে এরা ১৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। দেহের রং সবুজ, বাদামি অথবা কালো এবং মাথার পেছনের অংশে একটি বিশেষ শিরা থাকে।

রাজ গোখরা প্রধানত অন্য সাপ খায়, যা এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘অফিওফাগাস হ্যানা’ (সাপ ভক্ষণকারী) থেকে বোঝা যায়। এ ছাড়া এরা ছোট প্রাণী, পোকামাকড় এবং সরীসৃপ খায়। যার ফলে ফসলের ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এ ছাড়া রাজ গোখরার বিষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ তৈরির গবেষণা করা হয়, যা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় সহায়ক।

Advertisement

আরও পড়ুন

দেখতে শান্ত হলেও ভয়ংকর এই মাছ আমাদেরই বাঁচাতে হবে সুন্দরবন

রাজ গোখরা সাধারণত শীতকালে ডিম পাড়ে। স্ত্রী রাজ গোখরা পাতা এবং মাটি ব্যবহার করে বড় একটি বাসা বানায় এবং সাধারণত ২০ থেকে ৪০টি ডিম পাড়ে। মা সাপটি ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়া পর্যন্ত সেই বাসা পাহারা দেয়, যা প্রায় ২ মাস পর্যন্ত হতে পারে।

বাংলাদেশে রাজ গোখরার সংখ্যা খুবই কম। পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে এদের উপস্থিতির প্রমাণ রয়েছে। তবে বনাঞ্চল ধ্বংস এদের সংখ্যা হ্রাসের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বনাঞ্চলে এদের উপস্থিতি পরিবেশের সুস্থতার প্রতীক। তাই বনাঞ্চল সংরক্ষণ, গবেষণা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। যাতে এই বিরল সাপের প্রজাতি টিকে থাকতে পারে।

Advertisement

তথ্যসূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, বিবিসি ওয়াইল্ডলাইফ, উইকিপিডিয়া।

এসইউ/এমএস