বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপিনো সেনাদের ওপর ছুরি ও কুড়াল দিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে চীনের কোস্টগার্ডের সেনাদের বিরুদ্ধে। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ফিলিপাইনের কর্মকর্তারা। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রকে একটি উত্তেজনাপূর্ণ বিরোধে কিংবা আরেকটি বৈশ্বিক সংঘাতে উসকে দিতে পারে।
Advertisement
ফিলিপিনো কর্মকর্তারা জানান, তাদের সেনারা দুটি বোটে করে স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের ‘দ্বিতীয় থমাস প্রাচীরের’ দিকে যাচ্ছিলেন। ওই প্রাচীরটিতে থাকা নৌসেনাদের খাবারসহ অস্ত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। সেসময় কুড়াল ও চাপাতি দিয়ে ফিলিপিনোদের বোটে হামলা চালান চীনা কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এতে ফিলিপাইনের বোট দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চীনা সৈন্যরা আটটি মোটরবোটে করে এসে ফিলিপাইনের ওই দুটি বোটে হামলা চালান।
প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় ও নৌকায় নৌকায় ধাক্কাধাক্কি হয়। এরপর চীনা কোস্টগার্ডের সদস্যরা ফিলিপিনো সেনাদের বোটে উঠে পড়েন ও বাক্সে থাকা এম-৪ রাইফেল, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন। ফিলিপাইনের দুজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীনের সেনারা ফিলিপিনো নৌবাহিনীর সদস্যদের ওপরেও হামলা চালিয়েছেন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এমনকি, হামলায় একজনের বুড়ো আঙুলও কেটে গেছে।
ফিলিপাইনের সেনাবাহিনীর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ফিলিপাইনের দুটি বোট ঘিরে রেখেছেন চীনের সেনারা। ছুরি ও কুড়াল দিয়ে ফিলিপিনো সেনাদের ভয় দেখাচ্ছেন চীনা সেনারা।
Advertisement
ফিলিপাইনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল রোমিও ব্রাওনার জুনিয়র চীনের এই আচরণকে ‘দস্যুতা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। চীনারা যেসব অস্ত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে সেগুলো ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, চীন দাবি করেছে যে দক্ষিণ চীন সাগরের যে অংশে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে প্রবেশ না করতে ফিলিপাইনের নৌবাহিনীকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সতর্কতা না মানায় এই চীনা সেনারা ফিলিপাইনের সেনাদের উপর চড়াও হয়।
১ দশমিক ৩ মিলিয়ন বর্গ মাইলের দক্ষিণ চীন সাগর ও এর মধ্যে অবস্থিত দ্বীপগুলোর দাবিদার এই অঞ্চলের চারপাশে থাকা সব দেশই। তবে চীন এর প্রায় পুরোটাই তার ‘নাইন-ড্যাশ লাইন’ এর মধ্যে আবদ্ধ করে নিজেদের সার্বভৌম অঞ্চল হিসেবে দাবি করে। এদিকে, ফিলিপাইন তাদের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে এই জলভূমির দাবি বজায় রাখে, যা তাদের উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত।
এই সাগরের মূল বিতর্কিত স্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে প্যারাসেল ও স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ। উভয় স্থানের বিতর্কিত দ্বীপগুলোতে সামরিক স্থাপনা তৈরি করেছে চীন।
Advertisement
সূত্র: সিএনএন, এপি ও অন্যান্য
এসএএইচ