দেশজুড়ে

৫০ বছর পর হঠাৎ গ্রামীণ সড়কে রেলের খুঁটি

নেত্রকোনার অন্তত ১৫টি স্থানে গ্রামীণ সড়কে রেলকর্তৃপক্ষ খুঁটি বসিয়ে পথ বন্ধ করে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েকটি গ্রামের মানুষ। স্থানীয়দের দাবি, ৫০ বছর ধরে উন্মুক্ত থাকলেও হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ২০ গ্রামের একমাত্র সড়ক। জেলা শহরে যাতায়াতের একমাত্র এই সড়ক হঠাৎ করে এভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসী। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, দুর্ঘটনা এড়াতে নেওয়া হয়েছে এমন পদক্ষেপ।

Advertisement

স্থানীয় এলাকাবাসী ও রেলকর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯১২-১৯১৮ সালে ময়মনসিংহ-ভৈরববাজার রেলওয়ে কোম্পানি ময়মনসিংহ-গৌরীপুর, গৌরীপুর-নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ, শ্যামগঞ্জ-জারিয়া ঝাঞ্চাইল ও গৌরীপুর-ভৈরববাজার রেললাইন স্থাপন করা হয়। এ সময় নেত্রকোনা রেলওয়ে স্টেশন তৈরি করা হয়। এরপর ১৯৪৮-৪৯ সালের মধ্যে সরকার অধিগ্রহণ করে রেল চালু করে।

সম্প্রতি দুর্ঘটনা এড়াতে নেত্রকোনা সদরের সতরোশ্রী, নয়ানগর, ধীতপুর, মোবারকপুর, সৈয়দপুর, শিমুলজানীসহ ২০ গ্রামের সঙ্গে জেলা শহরের একমাত্র পথে খুঁটি বসিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নেত্রকোনার অন্তত ১৫টি স্থানে গ্রামীণ সড়ক এভাবে বন্ধ করা হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় রেলকর্তৃপক্ষ।

হঠাৎ করে এভাবে পথ বন্ধ করে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় শতাধিক পোল্ট্রি খামারের মালিকসহ এলাকাবাসী। শুধু খামার মালিকরাই নয়, জরুরি প্রয়োজনে রোগী আনা নেওয়ার পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি গ্রামের একমাত্র পথ এভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। অবিলম্বে সড়কের খুঁটি অপসারণের দাবি তাদের।

Advertisement

নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আতিকুর রহমান আতিক বলেন, কয়েকদিন আগে হঠাৎ করে একটি গ্রামীণ সড়কের মাঝখানে তিনটি লোহার খুঁটি বসিয়ে দেয় রেলের লোজকন। এতে এই সড়কে চলাচলকারী অন্তত দশটি গ্রামের মানুষ খুব বিপদে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজনে রোগী নেওয়ার পথ নেই। বিকল্প সড়কে গেলে ১০-১৫ কিলোমিটার ঘুরে জেলা শহরে যেতে হবে।

স্থানীয় নয়ানগর গ্রামের কামাল হোসেন ও পোল্ট্রি খামারের মালিক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘চার হাজার মুরগির খামার করেছি। আমার মতো গ্রামের আরও ২০ জনের খামার রয়েছে। আমরা শহরে মুরগি নিতে পারছি না। মুরগির খাবার আনতে পারছি না। খুব বিপদে পড়েছি।’

একই এলাকার খায়রুল হক, মমিন মিয়া ও আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, ‘৫০ বছর ধরে এই জায়গার কোনো রেল দুর্ঘটনা ঘটেনি। আমরা এই সড়কে রেললাইন পার হয়ে ২০টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করি। এখন আমাদের সড়ক বন্ধ করে দেওয়ায়  চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা দ্রুত সড়কটির খুঁটিগুলো অপসারণ চাই।‘

জানতে চাইলে নেত্রকোনা বড় স্টেশনের মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে রেলওয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা জানা নেই। এই সড়কগুলো অরক্ষিত ভেবে এভাবে খুঁটি বসানো হয়েছে। দুর্ভোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানানো হবে।

Advertisement

এইচ এম কামাল/এফএ/এমএমএআর/জিকেএস