ঈদের ছুটিতে পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সুউচ্চ কুলিং টাওয়ার দেখতে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। একইসঙ্গে তারা উপভোগ করছেন পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত শতবর্ষী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু। রূপপুর প্রকল্প, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর মতো তিনটি ছাড়াও পদ্মা নদীর অপরূপ সৌন্দর্য ও পাকশী রেলওয়ের বিভিন্ন ব্রিটিশ স্থাপনা দর্শনাথীদের মুগ্ধ করছে।
Advertisement
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রায় ১৮০ মিটার সুউচ্চ (প্রায় ৪০ তলা সমমান উঁচু) ৪টা কুলিং টাওয়ার দেখতে শত শত মানুষ লালন শাহ সেতু, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে ও পাকশী রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় জমিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ভিড় লালন শাহ সেতুতে।
ঈদের দিন থেকে তৃতীয় দিন পর্যন্ত প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল নিয়ে লালন শাহ সেতু থেকে কুলিং টাওয়ারসহ নির্মানাধীণ রূপপুর প্রকল্প এলাকা দেখছেন। অনেকেই লালন শাহ সেতুতে দাঁড়িয়ে কুলিং টাওয়ারের ছবি তুলছেন এবং কেউ কেউ সেলফি তুলছেন। রূপপুর প্রকল্প এলাকায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা থাকায় দূরে দাঁড়িয়ে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এ প্রকল্পের চলমান নির্মাণ কাজ দেখছেন তারা। এছাড়াও পদ্মা নদীর ওপর দাঁড়িয়ে থাকা শতবর্ষী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ১১০ বছর পরও এ ব্রিজের সৌন্দর্য এক চিলতে নষ্ট হয়নি। তাইতো প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী এ ব্রিজের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন।
একইসঙ্গে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশে সমান্তরালভাবে দাঁড়িয়ে আছে লালন শাহ সেতু। এটি দেশের তৃতীয় দীর্ঘতম সড়ক সেতু। এছাড়াও পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় কার্যালয়, যেখানে ব্রিটিশ আমলের রেল ইঞ্জিন, শত বছরে বড় বড় গাছগাছালি ও রেলের নানান নান্দনিক স্থাপনা সবাইকে বিমোহিত করছে।
Advertisement
ঈদের তৃতীয় দিন বুধবার (১৯ জুন) লালন শাহ সেতুতে দর্শনার্থী মুশফিকুর রহমান শাহীন জাগো নিউজকে বলেন, লালন শাহ সেতুতে দাঁড়িয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজের সৌন্দর্য উপভোগ করছি। পাশাপাশি পদ্মা নদীর ঠান্ডা বাতাসে শরীর জুড়িয়ে যাচ্ছে। এখানকার পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুবই উপভোগ্য। আমার মতো শত শত দর্শনার্থী এখানে দাঁড়িয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজে ঘুরতে আসা উপজেলার বড়ইচরা গ্রামের মিনারুল ইসলাম বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, পরিবার নিয়ে ঈদে ঘুরতে এসেছি পাকশীর হার্ডিঞ্জ ও লালন সেতু এলাকায়। এখান থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুউচ্চ কুলিং টাওয়ার ও প্রকল্পের নানা স্থাপনা দেখা যাচ্ছে। এখানে যারা ঘুরতে আসছেন তারা সবাই এখানকার সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। পাকশীর এ এলাকাটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুললে দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীরা এখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করতো পারতো।
শিক্ষাবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্রিটিশ নানন্দিক স্থাপনার নিদর্শন রয়েছে পুরো পাকশী জুড়ে। পদ্মা নদী, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রেলওয়ে বিভাগীয় সদর দপ্তর, নান্দনিক রেল স্টেশন, ব্রিটিশ আমলের শতবর্ষী শত শত গাছ সব মিলিয়ে পাকশী সৌন্দর্যের তীর্থস্থান বলা যেতে পারে। এ এলাকা পর্যটন শিল্পের আওতায় আনা হলে এখানে আরও দর্শনার্থীদের সমাগম বাড়বে।
এফএ/জিকেএস
Advertisement