ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে বেড়েই চলেছে অবৈধ তিন চাকার যান মাহেন্দ্রা। ঈদ উপলক্ষে এ অবৈধ যানের দৌরাত্ম্য বেড়েছে আরও বেশি। দৌলতদিয়া ঘাট, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানসহ হাইওয়ে থানা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
Advertisement
ঈদে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় সড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। সেই সুযোগে সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দ্রুত গতির মাহেন্দ্রা ও অটোরিকশা। সড়কে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও হাইওয়ে থানার সামনে দিয়ে কোনো বাধা বিপত্তি ছাড়াই যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে এই তিন চাকার অবৈধ যান।
জানা গেছে, মহাসড়কে চলাচলের কোনো অনুমতি নেই মাহেন্দ্রা বা অটোরিকশার। তবে তারা মহাসড়ক ব্যতীত আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে চলাচল করতে পারবে। কিন্তু যাত্রী পরিবহনের সুবিধা ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের জন্যই আঞ্চলিক সড়কে না চলে মহাসড়ক দিয়েই চলাচল করছে তারা।
যাত্রী হায়দার আলী, ইলিয়াছ মোল্লা, কামরুন নাহারসহ বেশ কয়েকজন বলেন, এখন যাত্রীর চাপ যেমন বেশি, তেমনি ভাড়াও বেশি। তাছাড়া বাসে সিট পাওয়া কষ্টকর এবং অল্প দূরত্ব হলে বাসে নেয় না। সেক্ষেত্রে বিকল্প বাহন হিসেবে তাদের মাহেন্দ্রা ও অটোরিকশায় করে যেতে হচ্ছে। আর এখন ভাড়াও অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি নিচ্ছে। মাহেন্দ্রা অনেক দ্রুতগতিতে চলে। তারপরও উপায় না পেয়ে ঝুঁকি নিয়েই মাহেন্দ্রায় যাচ্ছেন তারা।
Advertisement
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাহেন্দ্রাচালক বলেন, ঈদ উপলক্ষে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে এবং বেশিরভাগ গাড়ি মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে। তারপরও অনেক সময় পুলিশের ভয়ে ভেতরের রাস্তা দিয়ে ঘুরে ফিরে যাচ্ছে। তবে যাত্রীদের কারণে তাদের মহাসড়ক দিয়ে যেতে হয়। ভাড়া নির্দিষ্ট করে দেওয়ায় তারা নির্ধারিত ভাড়াই নিচ্ছেন। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় একটু বেশি।
রাজবাড়ী জেলা ডিজেলচালিত ত্রি-হুইলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ জুয়েল জানান, তাদের মহাসড়কে পুলিশ উঠতে দেয় না। যে কারণে তারা পালিয়ে পালিয়ে চালাচ্ছেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বেড়ি বাঁধের রাস্তা দিয়ে চলাচলের জন্য বলা হয়েছে। এবার ঈদ উপলক্ষে যেভাবে যাত্রী পাওয়ার কথা ছিল সেভাবে পাচ্ছেন না।
পাংশা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, মহাসড়কে চলাচলরত থ্রি-হুইলারগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দিচ্ছে পুলিশ। তারা যেন মহাসড়কে উঠতে না পারে সে বিষয়ে কাজ করছে।
আহলাদীপুর হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুল হালিম বলেন, মহাসড়কে চলাচলরত অবৈধ যানের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি মামলা দিচ্ছেন। এসব যানবাহনের মালিকদের সঙ্গে মিটিং করে বলা হয়েছে মহাসড়ক ছেড়ে অন্য রোডে চলাচল করতে।
Advertisement
তিনি বলেন, আসলে গাড়িতো অনেক। যা একদিনে উঠিয়ে দেওয়া সম্ভব না। তারপরও তারা প্রতিনিয়তই ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার জি.এম. আবুল কালাম আজাদ বলেন, তিন চাকার যানবাহন যেন সড়কে না উঠতে পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারপরও হয়তো পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু যানবাহন চলাচল করছে। তবে জেলা পুলিশ তৎপর রয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফরিদপুর ও রাজবাড়ীর পাংশা আসা-যাওয়ার জন্য উভয় পাশে যে বেড়িবাঁধের রাস্তা রয়েছে সেদিক দিয়ে তিন চাকার যান মাহেন্দ্রা চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এফএ/এমএস