কোরবানি ঈদের প্রথম দিন রাজধানীর আমিনবাজার ব্রিজ সংলগ্ন অস্থায়ী চামড়া বাজারে আকারভেদে ৭০০ থেকে ৯৫০ টাকায় গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে। ঈদের দ্বিতীয় দিনে একইস্থানে গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়।
Advertisement
যদিও মৌসুমি চামড়া ক্রেতারা বলছেন, তারা আগের দামেই চামড়া কিনছেন।
জানা গেছে, ছাগল ও ভেড়ার চামড়া বেশিরভাগ ক্রেতাই কিনতে চাইছেন না। দু-একজন ১০ টাকায় কিনছেন এসব চামড়া। একাধিক ছাগল ও ভেড়ার চামড়া রাস্তা, ফুটপাতে পড়েও ছিল।
ঈদের দ্বিতীয় দিন (১৮ জুন) দুপুরে আমিনবাজার ব্রিজের নিচে গিয়ে দেখা যায়, রিকশা, ভ্যানে করে চামড়া আনছেন বিক্রেতারা। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যই মাদরাসার শিক্ষার্থী। তবে চামড়ার ভালো মূল্য না পাওয়ায় হতাশার কথা জানিয়েছেন তারা।
Advertisement
আমিনবাজার জামিয়াতুস সুফফাহ মাদরাসা থেকে এসেছেন ৫ শিক্ষার্থী। তারা ৫ পিস গরুর চামড়া আর ৪ পিস ছাগলের চামড়া এনেছেন।
মাদরাসা শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান বলেন, ছাগলের চামড়ার কোনো দাম বলে না কেউ। গরুর চামড়া প্রতি পিস ৫০০ টাকা দাম বলছে। আরেকজন ৭৫০ টাকা দাম বলেছে। তারপর ক্রেতা আসছে না। চামড়া এখন নিতে চাইছে না ক্রেতারা।
তিনি বলেন, সোমবার, ঈদের দিন ট্যানারিতে চামড়া দিয়েছি। সেখানে ভালো দাম পেয়েছি। মাদরাসায় আরও চামড়া আছে। ভালো দাম না পেলে বিকল্প চিন্তা করতে হবে।
ব্রিজ সংলগ্ন ওয়াহাব মসজিদ থেকে ভ্যানে করে এনে তিনটি চামড়া ১৬০০ টাকায় বিক্রি করেন একজন ছাত্র। কালকের চেয়ে আজ দাম কম।
Advertisement
রূপনগর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে আমিন বাজার এসেছেন সাদেক আহমেদ। তিনি ১৪০০ টাকায় বিক্রি করেছেন দুই পিস চামড়া।
আরও পড়ুন
বিক্রি হয়নি সাড়ে ২৩ লাখ পশু রাজশাহীতে ছাগলের চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকায়, কোথাও ফ্রি ঈদে ১ কোটি ৪ লাখের বেশি পশু কোরবানি, সবচেয়ে কম ময়মনসিংহেতিনি বলেন, বড় গরুর চামড়ার দাম পেলাম ৭০০ টাকা। দাম গতবারের চেয়ে এবার ভালোই পেয়েছি।
চামড়া বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছোট-বড় নয়, চামড়া একদাম বলে বিক্রি করা হচ্ছে। চামড়ার দাম ৬০০-৭০০ টাকার বেশি বলছেন না ক্রেতারা।
মৌসুমি চামড়া বিক্রেতা শাহজাহান বলেন, আজ চামড়া আসছে কম। ঈদের দ্বিতীয় দিন গরু ও ছাগল কোরবানি হয় কম। কালকের দামেই চামড়া কিনছি আমরা। গতবারও তো চামড়ার দাম কম ছিল, এবার তো তাও ৭০০-৮০০ টাকা পেয়েছেন বিক্রেতারা।
ছাগলের চামড়ার দাম কম হওয়া প্রসঙ্গে সাকিব নামে এক ক্রেতা বলেন, ট্যানারিতে ছাগল-ভেড়ার চামড়া নিতে চায় না। আমরা কয়েকজন ১০-২০ টাকায় কিনছি।
অন্যদিকে, বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকার নির্ধারিত রেটের অর্ধেক দামও বলছে না ক্রেতারা।
এবার সরকার ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৫৫-৬০ টাকা। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতবছর কোরবানির ঈদে বড় আকারের (৩০-৩২ বর্গফুট) গরুর চামড়া ৯০০ টাকা ও মাঝারি আকারের (২০-২২ বর্গফুট) চামড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছোট গরুর চামড়া ৫০০ টাকা, ছাগলের চামড়া ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবার ক্রেতারা চামড়ার দাম আরও কম বলছেন।
এসএম/এসএনআর/জিকেএস