পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি এবং সমাজের অসহায়, দুস্থ ও গরিব মানুষের হক আদায়ে একইস্থানে ১২টি গরু ও ২০টি খাসিসহ ৩২টি পশু কোরবানি দিয়েছেন রাজবাড়ীর খানগঞ্জ ইউনিয়নের মানুষ।
Advertisement
সোমবার (১৭ জুন) সকালে ঈদের নামাজ আদায় শেষে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়নের বোয়ালমারি গ্রামের বাসিন্দারা এক সঙ্গে ১২টি গরু ও ২০টি খাসি কোরবানি করেন। অনেকে আবার মাংস কাটায় অংশ নিয়েও পান ভাগ।
খানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শরিফুর রহমান সোহান ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক প্রামানিকের নেতৃত্বে করা হয় এ আয়োজন। সমাজের অসহায়, দুস্থ ও গরিব মানুষের নামের তালিকা করেন তারা। মাংস কাটা সম্পন্ন হলে মেপে প্যাকেট করে তালিকা অনুযায়ী, গ্রামবাসীসহ আশপাশ থেকে আসা গরিব মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করা হয়।
জানা গেছে, প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে এই বোয়ালমারি গ্রামের মানুষ প্রামানিক বাড়ীর পুকুর চালায় এক সঙ্গে পশু কোরবানি করে আসছেন।
Advertisement
মাংস নিতে আসা অনেকে বলেন, মাংস কিনে খাওয়ার সার্মথ্য নাই বিধায় এখান থেকে কোরবানির মাংস নিতে এসেছেন এবং প্রায় প্রতিবছর এখানে আসেন। এখানে এক সঙ্গে অনেকগুলো কোরবানি হয়।
যারা কোরবানি দিয়েছেন তারা বলছেন, এর মাধ্যমে তারা এক ধরনের তৃপ্তি পান। তেমনি অসহায় গরিব মানুষগুলো আনন্দ পায়। পুকুরে সব পাশেই দলে দলে ভাগ হয়ে গরু বা খাসি কোরবানির পর চামড়া ছাড়ানো, মাংস কাটা ও ভাগের কাজ করেন অনেকে। এটা দেখতেও ভাল লাগে। কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও তারা সারাদিন এ কাজ করে যাচ্ছেন। দিন দিন তাদের এখানে কোরবানির পশুর সংখ্যা বাড়ছে। আশপাশের সমাজ বা এলাকায় তাদের মতো এক সাঙ্গে পশু কোরবানি করলে সমাজের অসহায় গরিব মানুষগুলো কিছু মাংস পেতো। অনেকের উচ্চ মূল্যের মাংস কেনার ক্ষমতা নাই। তাই অনেকে গরু ও খাসির একটু মাংসের জন্য এই দিনটির আশায় থাকেন।
খানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শরিফুর রহমান সোহান বলেন, ঈদের নামাজ আদায় শেষে তাদের গ্রামের সবাই প্রামানিক বাড়ীর পুকুর চালায় কোরবানির পশু এনে কোরবানি করেন। এখানে যারা মাংস কাটার কাজ করে তাদের কেউ পেশাদার কসাই না। কেউ ব্যবসায়ী, কেউ চাকরিজীবী, আবার কেউবা দিনমজুর। ঈদের আনন্দ এক সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে সবাই এক হয়ে এ কাজ করছেন। গরিব মানুষের হক পূরণ ও ঈদের দিনে সবাইকে খুশি করতে তাদের এই আয়োজন। আগামী দিনে পশু কোরবানির পরিসর আরও বাড়বে তিনি আশাবাদী।
আরইউআর/এসএনআর/জেআইএম
Advertisement