দেশজুড়ে

মসজিদ কমিটির সভাপতির গরু কোরবানিতে দেরি করায় ইমামকে মারধর

গাজীপুরের শ্রীপুরে মসজিদ কমিটির সভাপতির গরু কোরবানিতে দেরি করে যাওয়ায় ইমামকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে ইমামকে মৌখিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

Advertisement

সোমবার (১৭ জুন) ঈদের দিন সকাল ১০টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভাংনাহাটি মধ্যপাড়া বায়তুন নূর জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর মসজিদ কমিটির সভাপতি কফিল উদ্দীনের সমালোচনা করছেন স্থানীয়রা। তারা ইমামকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, সকালে ঈদুল আজহার নামাজ শেষে ঈদগাহ মাঠ থেকে মুসল্লিরা বাড়ি ফিরে কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় বেশ কয়েকজন মুসল্লি তাদের পশু জবাই করতে ইমামের সাহায্য চান। এরপর এক মুসল্লির গরু জবাইয়ের জন্য গেলেই মসজিদ কমিটির সভাপতি কফিল উদ্দীন তার কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য ইমামকে ফোন দেন। এ সময় ইমাম পাশের আরেক বাড়ির পশু জবাই করে আসছেন বলে জানালে ক্ষেপে যান কফিল উদ্দীন। পরে ইমাম তার গরু জবাই করতে গেলে কফিল উদ্দীন রেগে গিয়ে মারধর শুরু করেন ইমামকে। এ সময় আশপাশের অন্যরা এগিয়ে এসে ইমামকে উদ্ধার করেন।

Advertisement

মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘ঈদের নামাজ শেষে পশু কোরবানির প্রস্তুতির এক পর্যায় পাশের ইদ্রিস আলীর কোরবানির পশু (গরু) জবাইয়ের জন্য ডাকলে সেখানে চলে যাই। এ সময় সভাপতি সাহেব ফোন করেন তার গরু জবাই করার জন্য। একটু দেরি করে তার কাছে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং তার অনুমতি ছাড়া অন্য গরু জবাই করার অপরাধে আমাকে গালমন্দ করেন। এক সময় আমার শরীরেও হাত দেন।’

ইমাম বলেন, ‘আমাকে চাকরি ছাড়তে বলা হয়েছে। কিন্তু আমি এখন নিজে থেকেই চাকরি ছেড়ে দেবো। আমাকে মারধরের বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানিয়েছি।’ তবে তিনি এ ব্যাপারে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ভাংনাহাটি মধ্যপাড়া বায়তুন নূর জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল আমীন বলেন, ‘আমি এমন একটি বিষয় (মারধরের) শুনেছি। তবে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো।’

মসজিদ কমিটির সদস্য ইদ্রিস আলী বলেন, ‘আমার গরু কোরবানির সময় ফোন দেন সভাপতি। পরে গেলে একটা ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। আমরা সবাই মিলে মীমাংসা করবো বিষয়টি।’

Advertisement

এ বিষয়ে জানতে মসজিদ কমিটির সভাপতি কফিল উদ্দীনের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন কেটে দেন।

শ্রীপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামরুজ্জামান মন্ডল বলেন, ‘নামাজের পরে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে ইমাম আমার কাছে এ বিষয়ে বিচার দিয়েছে।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঈদের দিন ইমামকে মারধর করা একটা জঘন্য কাজ।’

শ্রীপুর মডেল থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার পণ্ডিত বলেন, ‘এমন কোনো খবর আমাদের জানা নাই। তবে এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগও করেননি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।’

এমএআই/এসএনআর/এমএমএআর/জেআইএম