পশু জবাইয়ের পর আনুষঙ্গিক কাজ করার জন্য পেশাদার কসাইয়ের প্রয়োজন হয়। তবে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়েও কসাই পাওয়া যাচ্ছে না। বেশিরভাগ কসাই বিগত বছরগুলোতে কাজ করার সুবাদে আগে থেকে কাজের অর্ডার নিয়েছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন অনেক কোরবানিদাতা।
Advertisement
উপজেলার মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমার মেয়ের বাড়ির গরুর কাজ করতে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে কসাই খোঁজ করেছি। কিন্তু কোথাও পেলাম না। এখন মনে হচ্ছে নিজেরাই কাজ করতে হবে।’
ওসমানপুর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘বছরের অন্যান্য সময় একটি গরু জবাইয়ের পর মাংস প্রস্তুত করতে আকারভেদে ৩-৬ হাজার টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক দেওয়া হয় কসাইকে। কিন্তু কোরবানিতে ১২-১৫ হাজার টাকা দিয়েও কসাই যাওয়া যাচ্ছে না। একেকজন কসাই কয়েকজনের কাছে বুকিং দিয়ে রেখেছেন।’
বড়দারোগাহাট বাজারের মনু মিয়া পেশায় একজন কসাই। তিনি বলেন, ‘বিগত ১০ বছর ধরে আমি এবং আমার সঙ্গে থাকা তিনজন মিলে কোরবানির চারটি গরুর মাংস প্রস্তুতের কাজ করে আসছি। তারাও আমাদের আশায় থাকেন। তাহলে অন্যের কাজ কীভাবে করবো?’
Advertisement
মিঠাছরা বাজারের কসাই সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘অন্যদের তুলনায় কোরবানের দিন পারিশ্রমিকতো বেশি হবেই। সারাবছরতো আর বেশি টাকা নিতে পারছি না। গরুর সাইজভেদে ৭-১৫ হাজার টাকা নিচ্ছি।’
জোরারগঞ্জ বাজারের কসাই জহির উদ্দিন জানান, কোরবানির দিন মাংসের ব্যবসা বন্ধ থাকে। তাই এ দিনটি তিনি ও তারা দুই সহযোগী কোরবানির কাজে চুক্তি নেন। গরুর আকার অনুযায়ী পারিশ্রমিক নেন।
মিরসরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় ৪৫ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। এসব পশু কোরবানির জন্য বিপুল পরিমাণ শ্রমিক প্রয়োজন। কিন্তু সে তুলনায় অভিজ্ঞ শ্রমিক অনেক কম। বেশিরভাগ কোরবানিদাতা নিজেরাই মাংস প্রস্তুতের কাজ করে থাকেন।
উপজেলার ধুম এলাকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের পরিবারে গরু কোরবানির জন্য কসাই নির্দিষ্ট করা আছে। তারা প্রতিবছর কোরবানের দিন কাজ করে দেন। এবারও দুটি গরু কোরবানি দিচ্ছি। পেশাদার কসাই ছাড়া অন্যদের পক্ষে গোছালো কাজ করা সম্ভব হয় না।
Advertisement
এসআর/জিকেএস