দেশজুড়ে

গরুর হাটের জন্য সড়ক বন্ধ, লাঠি হাতে পাহারায় চেয়ারম্যানের লোকজন!

 

মুন্সিগঞ্জে সদরের গুরুত্বপূর্ণ মুক্তারপুর-বিনোদপুর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে গরুর হাটের কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। এতে পথটি দিয়ে চলাচলকারীদের ব্যাপক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এ নিয়ে কেউ কথা বলতে গেলে লাঠি হাতে তেড়ে আসছেন হাটের স্বেচ্ছাসেবকরা।

Advertisement

রোববার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুক্তারপুর সেতু সংলগ্ন তিতাস গ্যাস কার্যালয় এলাকায় দেখা যায়, হাটের স্বেচ্ছাসেবকরা হাতে লাঠি। তারা ঢাকা-মুক্তারপুর-টংগিবাড়ী সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। সিমেন্টের বস্তা ও বাঁশ দিয়ে সড়কটি বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে গালিগালাজ ও লাঠি হাতে তেড়ে আসছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।

সদর উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মুক্তারপুর গরুর হাটটি ৩৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় ইজারা নেন পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আব্দুল মতিন। হাট কমিটির পাশাপাশি চেয়ারম্যানের লোকজনও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সড়কটিতে অবস্থান নিয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন।

অটোরিকশার যাত্রী সুমিত সরকার বলেন, ‘পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদের অদূরে তিতাস গ্যাস কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন যুবক আমাকে বহনকারী অটোরিকশাটি আটকে দেয়। জানতে চাইলে তারা নিজেদের গরুর হাটের লোক বলে জানান। তাদের প্রত্যেকের হাতে বাঁশি ও লাঠি ছিল। একইসময় আমার মতো আরও ৫-৭টি গাড়ি তারা এই পথ থেকে ফিরিয়ে দেয়।’

Advertisement

মুুন্সিগঞ্জগামী আরেক যাত্রী সাথি আক্তার বলেন, ‘যতটুকু জায়গা নিয়ে হাট বসানোর কথা তার চেয়ে বেশি এলাকা নিয়ে হাট বসানো হয়েছে। এরপর আবার তাদের সুবিধার জন্য সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কতটা ক্ষমতাবান হলে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব করা সম্ভব!’

স্থানীয় আশরাফ আলী বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যারা আছেন তাদের কারও কারও কাছে স্টিলের সুইচ লাঠি দেখেছি। তারা বলছেন, চেয়ারম্যান নাকি এ নির্দেশনা দিয়েছেন।’

জানতে চাইলে মুক্তারপুর পশুর হাটের ইজারাদার আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমরা কোনো সড়ক বন্ধ করিনি। সড়ক যাতে সচল থাকে সে ব্যবস্থা করেছি। দরকার হলে দেখে যান।’

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘হাটের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি হাটে গিয়েছিলাম শুধু গরু কিনতে। আমি কাউকে সড়ক বন্ধ করতে বলিনি। কেউ যদি আমার নাম বলে থাকে তার বিচার হবে।’

Advertisement

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফিফা খান বলেন, কাউকে সড়ক বন্ধ করে হাট বসানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও সড়ক বন্ধ করে হাটের কার্যক্রম পরিচালনা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরাফাত রায়হান সাকিব/এসআর/জিকেএস