কোরবানির ঈদ দরজায় কড়া নাড়ছে। উৎসবের আনন্দ একে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার চলছে প্রস্তুতি। এই ঈদে গরু, ছাগল থাকে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। সে তুলনায় ফ্যাশন হাউজ-বিপণিবিতানে নেই ভিড়।
Advertisement
বিক্রেতারা বলছেন, শুক্রবার বেচাবিক্রি হয়েছে ভালোই। আজও বিকেলের পর বিক্রি বাড়ার আশা করছেন তারা। তবে ঈদের এসময়েও ক্রেতা টানতে মূল্যছাড়সহ নানান সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এরপরও শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দোকানগুলোতে ক্রেতার দেখা তেমন মেলেনি।
শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে মিরপুরের শাহ আলী, মিরপুর শপিং সেন্টারসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মিরপুর শপিং সেন্টারের তিনতলায় উঠে চোখে পড়ে কয়েকটি দোকানে ক্রেতাদের শাড়ি, জামা দেখাচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে বেশিরভাগ দোকানই ছিল ক্রেতাশূন্য। বিক্রেতারা অলস সময় পার করছেন। দু-একজন ক্রেতা দেখলেই পোশাকসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ডাকাডাকি করছেন।
Advertisement
রাহাত ফ্যাশন দোকানটিতে গিয়ে দেখা যায়, একজন নারী ক্রেতাকে পোশাক দেখাচ্ছেন বিক্রেতা গুলজার।
এই বিক্রেতা বলেন, রোজার ঈদের চেয়ে কোরবানির ঈদে বেচাকেনা সাধারণত কম হয়। তবে গত কোরবানির ঈদের চেয়ে এবার বিক্রি কম হচ্ছে। শুক্রবার ছুটির দিন ক্রেতা ভালোই ছিল। আজও বিকালের পর ক্রেতা বাড়বে।
মার্কেটটির বিক্রেতারা বলছেন, ঈদে ছোটদের পোশাক ও জুতা বিক্রি হচ্ছে বেশি। ক্রেতা টানতে মূল্যছাড় দিচ্ছেন তারা।
মার্কেটটির ২য় তলায় সাজিদ নামের একজন কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, বড়দের জামাকাপড়ের চাহিদা কম। ছেলে শিশুদের শার্ট, প্যান্ট, মেয়েদের ফ্রক, গাউন বিক্রি হচ্ছে বেশি।
Advertisement
নিজের দুই সন্তানের জন্য জামা কিনতে আসা কল্যাণপুরের বাসিন্দা হাসান আবেদিন বলেন, এবারের ঈদে নিজের জন্য জামাকাপড় কিনছি না। রোজায় সবার জন্য জামাকাপড় কেনা হয়েছে। কোরবানি ঈদে দুই ছেলের জন্য শার্ট, প্যান্ট কিনতে এসেছি। আসলে ঈদ তো শিশুদের জন্যই।
দুপুরে মিরপুর-১ নম্বর সংলগ্ন বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলোতে পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রীর উপরে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিতে দেখা গেছে। সারা, ডিমান্ড, ফ্রি জোনসহ একাধিক ফ্যাশন হাউজে মূল্যছাড়ের সুযোগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেখা গেছে। ফ্যাশন হাউজগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলছেন, ছাড় দিয়েও ক্রেতা মিলছে না।
টুয়েলভের বিক্রয় প্রতিনিধি রাসেল বলেন, এ ঈদে পোশাক কেনাকাটায় মানুষের আগ্রহ কম। তারপরও কিছু বিক্রি হচ্ছে।
সেইলরের শোরুমে ছোট ব্যাগ দেখছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী অহনা।
তিনি বলেন, ৩০ শতাংশ ছাড়ে ব্যাগগুলো পাওয়া যাচ্ছে। দাম কিছুটা কমেছে। ১৬০০ টাকার ব্যাগ ১১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া জুতা, থ্রিপিসেও ছাড় আছে। দেখে শুনে কিনছি।
মিরপুর-১০ নম্বরের শাহ আলী মার্কেটেও ক্রেতার উপস্থিতি কম ছিল। বেলা ১২টার পর কেউ কেউ খুলেছেন দোকান। দুপুরের পর কোনো কোনো দোকানিকে জামা-কাপড় গোছাতে দেখা গেছে। বেশিরভাগ বিক্রেতাকে মোবাইল ফোনে বুঁদ হয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।
বিছানার চাদর, মশারি বিক্রেতা রায়হান বলেন, এ ঈদে কোনো চাঁদরাত নাই। শুক্রবার বিক্রি ভালোই হয়েছে। সেদিনই মূল চাপ গেছে। সবার আগ্রহ গরু, ছাগলে। বাকি সময়ে টুকটাক কিছু বিক্রি হবে।
মার্কেট ও বিপণিবিতানে ক্রেতা না থাকলেও মিরপুর ২ ও ১০ নম্বর ফুটপাত ছিল ক্রেতায় পরিপূর্ণ।
এসএম/এমএইচআর/জেআইএম