জাগো জবস

বিসিএস লিখিত: বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের দশ পরামর্শ

বিসিএসের তিনটি ধাপের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে পারলে কাঙ্খিত ক্যাডার পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিসিএস লিখিত বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র বিষয়ের মোট ২০০ নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ৪৩তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. ইমাম হোসেন জ্যোতি—

Advertisement

১. প্রথমে ৩৫তম থেকে ৪৫তম বিসিএস পর্যন্ত লিখিত প্রশ্ন সমাধান করে নিন। ব্যাকরণ অংশের (৩০ নম্বর) গুরুত্বপূর্ণ ও বারবার আসা টপিক নোট করে নিন। বিগত প্রশ্ন সমাধান এবং প্রিলিমিনারির পড়া টুকু রিভিশন করলে আপনার এই অংশের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। এজন্য মাধ্যমিক বোর্ড বই এবং যে কোনো গাইড বইয়ের বিগত প্রশ্ন সমাধান করে নিবেন আগে। প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম, শুদ্ধ বাক্য লিখন এবং বাগধারা বিষয়ক উত্তর যেন পরীক্ষকের নজরে পড়ে এমন স্বচ্ছ করে লিখুন।

২. বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতিটা বেশ টেকনিক্যাল। পরীক্ষার হলে এজন্য আপনি সময় পাবেন অল্প, তবে সাহিত্যসমৃদ্ধ ও তথ্যভিত্তিক অল্প লেখাও আপনাকে কাঙ্ক্ষিত মার্কস এনে দেবে এই অংশে। বিগত সালের প্রশ্ন, প্রাচীন ও মধ্যযুগ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিখ্যাত গ্রন্থ, পিএসসির ১১ জন সাহিত্যিক, পঞ্চপাণ্ডব কবি, সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ লেখক—বিশেষ করে যারা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্রন্থ লিখে খ্যাতিমান; এমন টপিকগুলো অবশ্যই পড়ে যাবেন। বিগত প্রশ্নের ওপর ভিত্তি করে কোটেশন বা কবিতার লাইন মুখস্থ ও নোট করে রাখুন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করুন।

৩. ভাবসম্প্রসারণ তিনটি প্যারায় লিখুন। প্রথম প্যারায় ২-৩ লাইনে টপিকটির মূলভাব লিখুন। দ্বিতীয় প্যারায় টপিকটি বিশ্লেষণ করুন। উদাহরণ ও তৃতীয় প্যারায় পরামর্শমূলক কথা দিয়ে শেষ করুন। এই অংশের প্রস্তুতিতে আপনি নবম-দশম শ্রেণিতে পড়েছেন অথবা আপনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এমন বিষয়ের ভাব সম্প্রসারণ লিখতে হবে। তবে বিষয়টির প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কতটা উচ্চমানের ও গুছানো মূলত সেটিই পরীক্ষকের নজরে আসবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

৩৩৮ জনকে নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ রেলওয়ে, এসএসসি পাসেও আবেদন ১১ বিভাগে ১৯ জন শিক্ষক নিয়োগ দেবে বুয়েট

৪. সারমর্ম বা সারাংশ আপনার নিজের মতো করে সাহিত্যসমৃদ্ধ ২-৩টি লাইনে লিখুন। এর জন্য পূর্বে আপনি খসড়া করে নিবেন ঠিক কি লিখতে চান সে বিষয়ে। এই অংশে ২০ নম্বর এবং যথেষ্ট সময় বরাদ্দ করতে হবে। আপনি চাইলে খাতায় সারাংশ লেখা শেষে আবারও সারাংশ লেখা যাবে এমন কিছুটা গ্যাপ রাখতে পারেন। এতে আপনার পরবর্তীতে সংশোধনের প্রয়োজন হলে সেটি কাজে লাগবে।

৫. চিঠি, প্রতিবেদন ও দরখাস্তের ফরম্যাটগুলো শিখে রাখুন। প্রতিবেদন লিখতে প্রতিবেদন সমস্যার বিস্তারিত, সমস্যার সমাধানে আপনার পরামর্শ প্যারা করে উল্লেখ করুন। চিঠির খামে বিদেশি বন্ধুর কাছে চিঠির জন্য ইংরেজিতে লিখুন। চিঠিতে উল্লিখিত বিষয়ের সুস্পষ্ট বর্ণনা ও ব্যাখ্যা অথবা বিস্তারিত লিখুন।

৬. কাল্পনিক সংলাপ যেন গঠনমূলক আলোচনার, প্রশ্নোত্তর নির্ভর ও তথ্যবহুল হয়। চরিত্রগুলোকে বাস্তবিক আলোচনা ভিত্তিক রাখতে হবে। বাস্তব রুপ দিতে প্রয়োজনে ৩টি চরিত্র বা একটি সম্মিলিত চরিত্র আনুন। হাতে সময় থাকলে সংলাপের শুরুতে বিষয়, সংলাপ কারী, সংলাপের স্থান উল্লেখ করে দিন। সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ১৫ নম্বরের সংলাপ সমাপ্ত করুন।

Advertisement

৭. অনুবাদের ক্ষেত্রে আপনাকে ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করতে হবে। আপনি আক্ষরিক এবং ভাবানুবাদের যে কোনো একটি করবেন। ইংরেজি বিষয়ে ৫০ নম্বরের অনুবাদ প্রস্তুতি থাকায় আপনার এ অংশের আলাদা প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। তবে সার্বিক অনুবাদ প্রস্তুতিতে আপনি পত্রিকা থেকে অনুবাদ করতে পারেন।

আরও পড়ুন

নিয়োগ দেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, আবেদন ফি ৩০০ টাকা ম্যানেজার পদে নিয়োগ দেবে ব্র্যাক ব্যাংক, স্নাতক পাসেও আবেদন

৮. গ্রন্থ সমালোচনার ক্ষেত্রে বিগত প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে গুরত্বপূর্ণ বই সম্পর্কে ভালোভাবে পড়ুন। বিখ্যাত সাহিত্য ও বিভিন্ন জনের থেকে কমপক্ষে ১টি বই পড়ে রাখুন, সাথে লেখকের নাম এবং প্রকাশের সালসহ। বঙ্গবন্ধুর লিখিত ৩টি বই, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বইগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বইয়ের নাম উল্লেখ করে দিয়েছে। তাই গুরুত্বপূর্ণ ও বিখ্যাত বইগুলো বেশি করে পড়ার বিকল্প নেই। এজন্য ফেসবুকে, গুগলে বিভিন্ন বিখ্যাত বই সার্চ দিয়ে রিভিউ পড়তে পারেন।

৯. ৪০ নম্বরের রচনা পূর্বের মতো এখন কমন না পড়লেও বিষয়গুলো খুবই পরিচিত থাকে। তাই এজন্য বিগত প্রশ্ন ও দেশের ট্রেন্ডিং টপিকগুলো খেয়াল রাখলে কমন পাবেন। বিগত বিসিএসে অপশন থাকলেও ৪৫তম বিসিএসে কোনো অপশন ছিল না। তাই উপস্থিত জ্ঞান, ধারণার মিশেলে আপনার রচনা লিখতে হবে। ডাটা ও কোটেশনের চাইতে সাহিত্যসমৃদ্ধ লেখা, সঠিক বানান, বিষয়ের গভীরতা উপস্থাপন বিষয়ে মনযোগী হতে হবে। রচনার আদ্যোপান্ত আপনি পয়েন্ট আকারে অথবা ভূমিকা দিয়ে লেখা আপনার উপস্থাপনকে স্পষ্ট করবে। ৪০ নম্বরের জন্য আপনি কত পৃষ্ঠা লিখবেন এটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং লেখার গুনাগুন আপনাকে নম্বর পেতে এগিয়ে দিবে।

১০. রচনার ৪০ নম্বরের জন্য আপনি কমপক্ষে ১ ঘন্টা বরাদ্দ করুন। সে ক্ষেত্রে আপনি সারাংশ বা সারমর্ম থেকে সময়টি পূরণ করতে পারেন। এ ছাড়া ২০০ নম্বরের জন্য আপনি ২৪০ মিনিট সময় পাবেন। তাই প্রতিটি অংশের জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করে লিখুন। কিছু সময় রাখুন খাতা জমা দেওয়ার পূর্বে রিভিশন দেওয়ার জন্য। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

এমআইএইচ