প্রত্যেক বছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ হজ করছেন। কিন্তু একসঙ্গে এতো মানুষের উপস্থিতি পরিবেশের ওপর চাপ তৈরি করে। বিশেষ করে বর্জ্য, পানি ও জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে। তাছাড়া রয়েছে কার্বন নিঃসরণ।
Advertisement
এ জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। যেমন বর্জ্য কমানোর জন্য হজযাত্রীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে, যে কোনো কিছু ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিচক্ষণ হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। মূলত হজ পালনের সময় সামগ্রিকভাবে কার্বন নিঃসরণ কমানোর কথা বলা হয়েছে।
সৌদি সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সমন্বয় করছে ও পরিবেশ সম্মত সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে। বিশেষ করে এসব বর্জ্য যাতে পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে না পারে সে ব্যাপারে নজর রাখছে।
দেশটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেন্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পৃথিবীর পবিত্রতম স্থানগুলোর পরিবেশ রক্ষার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এমডব্লিউএএন পরিদর্শন দলগুলো নিরাপদ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষে নজর রাখছে।
Advertisement
এর দলগুলো মে মাসে মক্কা ও মদিনাজুড়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেক্টরের ৪৯টি অপারেশনাল সুবিধা পরিদর্শন করেছে। মূলত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিয়মাবলী কার্যকর করতে এই পদক্ষেপ নেয় তারা।
এমডব্লিউএএন হজযাত্রীদের সেবা, প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত স্থায়িত্বকে প্রমোট করতে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
ন্যাশনাল সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল কমপ্লায়েন্স তথ্য সংগ্রহ ও হজ মৌসুমের আগে, চলাকালীন ও পরে বায়ুর গুণমান পর্যবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কেন্দ্রের মুখপাত্র সাদ আল-মাতরাফি বলেন, প্রাপ্ত পরিসংখ্যানগুলো সরাসরি কেন্দ্রীয় মনিটরিং স্টেশনে পাঠানো হয়, জাতীয় বিশেষজ্ঞরা সেগুলো বিশ্লেষণ করে এবং হজ কমিটিকে প্রতিবেদন দেয়।
Advertisement
এরপর হজযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় মাঠ পর্যায়ের কমিটি। পরিবেশের যে সব নিয়মনীতি ও মান রয়েছে তা ঠিকভাবে মানা হচ্ছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখে কেন্দ্র।
হজ অপারেশন রুমের প্রধান মোহাম্মদ আম্মার আমীন বলেন, এই বছরের অপারেশনাল পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য, পৌরসভা, শিল্প, কৃষি, জ্বালানি স্টেশন ও হজ যাত্রীদের ব্যবহৃত রাস্তাগুলোর সাইট ও সুবিধাগুলো পরিদর্শন।
আমীন বলেন, সাইট পরিদর্শনে গিয়ে যেসব অনিয়ম পাওয়া গেছে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হজ শুরুর আগে পরিবেশে ঠিক রাখতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
দ্বিতীয় ধাপে সেন্টারটি মাঠ পর্যায়ের পরিদর্শন জোরালো করবে। নিরাপত্তার জন্য পর্যবেক্ষণ করবে পানি, মাটি ও বায়ু।
আমীন বলেন, এ বছর পরিবেশগত বিষয়গুলোও পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়ার হবে।
কেন্দ্রের পরিদর্শক ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের দল অবিচ্ছিন্ন পরিবেশগত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অতিথিদের স্বস্তি নিশ্চিত, পরিবেশগত মান ও শব্দ দূষণের যেকোনো লঙ্ঘন শনাক্তে চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করছে।
পরিবেশ, পানি ও কৃষিমন্ত্রণালয় পানির অবকাঠামো উন্নত করার জন্য ১০টি প্রকল্প শুরু করেছে, যেখানে দুই হাজারকর্মী হজযাত্রীদের সেবা দিতে নিয়োজিত।
এদিকে প্রচণ্ড গরমের ঘটনায় আবহাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজি।
পরিবেশগত বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নিয়ে এরই মধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্মার্ট সিটি, বিকল্প এনার্জির উৎসের সঙ্গে খাপ খাওয়া, রিসাইক্লিংয়ে উৎসাহিত ও পরিবেশ বান্ধব পরিবহন সুবিধা।
এরই অংশ হিসেবে রয়েছে বৈদ্যুতিক ট্রেন ও বাস, নতুন ই-ইস্কুটার ও সেল্ফ ড্রাইভিং এরিয়াল টেক্সি সার্ভিস।
এসব টেকসই উদ্যোগের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে পরিবেশ বান্ধব হজ ও পরিবেশের ওপর চাপ কমাতে অবদান রাখতে পারে হজযাত্রীরা।
সূত্র: আরব নিউজ
এমএসএম