নেদারল্যান্ডসকে হারানোর মুহূর্ত থেকে বাংলাদেশের সমর্থকদের মনে ঘুরেফিরে একটাই প্রশ্ন- ‘টাইগারদের সুপার এইটে খেলা কি নিশ্চিত হলো?’ নাজমুল হোসেন শান্তর দল কি সেরা আটে পৌঁছে গেল? নাকি আরও হিসাবনিকাশ বাকি?’
Advertisement
বাস্তবতা হলো, আরও হিসাবনিকাশ বাকি। তবে সেটা কঠিন বা জটিল নয়। সামনে আছে দুই ধরনের সমীকরণ। প্রথম সমীকরণ- বাংলাদেশ ঈদুল আযহার দিন ভোরে নেপালের বিপক্ষে জিতলেই অনায়াসে চলে যাবে সেরা আটে। তখন শান্তর দলের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৪ ম্যাচে ৩ জয়ের সুবাদে ৬।
বাংলাদেশ ছাড়া গ্রুপ-ডি তে শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস, নেপাল কারোরই ৬ পয়েন্ট পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার ঝুলিতে ইতিমধ্যেই ৬ পয়েন্ট রয়েছে। আগামীকাল তারা নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলবে। স্বাভাবিক সমীকরণে সেই ম্যাচে প্রোটিয়াদেরই জয়ের সম্ভাবনা বেশি। তাই এই ম্যাচ জিতলে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৪ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮।
কাজেই দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহে আছে ৬ পয়েন্ট। যেটা হয়তো আগামীকাল শনিবার ৮ এ রূপান্তরিত হবে। আর বাংলাদেশের আছে ৪ পয়েন্ট। নেপালের বিপক্ষে জিতলে যা ৬ এ উপনীত হবে।
Advertisement
গ্রুপের অপর ৩ দল- শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস এবং নেপাল কারোরই ৬ পয়েন্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ, এই মুহূর্তে নেপালের আছে ১ পয়েন্ট, শ্রীলঙ্কারও আছে ১ পয়েন্ট। নেদারল্যান্ডসের পয়েন্ট ২ এবং তাদের শেষ খেলা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। কাজেই শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডস জিতলেও পয়েন্ট হবে ৪।
বাংলাদেশের এরইমধ্যে ৪ পয়েন্ট আছে। তাই দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের সুপার এইট খেলার সম্ভাবনা বেশি। তবে একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। যদি বাংলাদেশ নেপালের কাছে হারে এবং নেদারল্যান্ডস শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতে যায়, তাহলে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের পয়েন্ট সমান ৪ হয়ে যাবে। তখন কী হবে? এটাই আসলে দেখার বিষয়।
নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের হার এবং লঙ্কানদের বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের জয় হলে আসবে নেট রানরেটের হিসেব।
বর্তমানে নেদারল্যান্ডসকে হারানোর পর বাংলাদেশের নেট রানরেট নেদারল্যান্ডসের চেয়ে সমৃদ্ধ ও উন্নত। তাই স্বাভাবিক সমীকরণে বাংলাদেশের সেরা আটে খেলার সম্ভাবনা অনেক বেশি উজ্জ্বল।
Advertisement
বাংলাদেশ যদি শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে চরম পরিণতির সম্মুখীন না হয়, মানে খুব করুণভাবে না হারে, তাহলে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে নেট রানরেটে এগিয়েই থাকবে শান্তর দল।
এই মুহুর্তে বাংলাদেশের নেট রানরেট এবং নেদারল্যান্ডসের নেট রানরেট যথাক্রমে +০.৪৭৮ ও -০.৪০৮।
নেট রানরেটটি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের নেট রানরেট প্লাস এবং নেদারল্যান্ডসের মাইনাস। এই প্লাস তখনই মাইনাসে যাবে, যখন শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ নেপালের বিপক্ষে যাচ্ছেতাই বা শোচনীয়ভাবে হেরে যাবে।
ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। টি-টোয়েন্টির পরতে পরতে অনিশ্চয়তার উঠানামা। তারপরও শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়ের মধ্য দিয়ে নিজেদের কমবেশি খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ। এই দুই জয়ে সেরা আটের খুব কাছে টাইগাররা। এরকম অবস্থায় নেপালের বিপক্ষে বাজেভাবে হারবে তা ভাবতেও একটু দ্বিধা হয়। তাই এখান থেকে বাংলাদেশ যদি নেপালের কাছে হেরেও যায়, তাতেও নেট রানরেটের এই হিসেবে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে এগিয়ে থেকে সেরা আটে চলে যাবে। কারণ, নেদারল্যান্ডস নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দিলেও নেট রানরেটে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ।
অর্থাৎ, বাংলাদেশ যদি নেপালের বিপক্ষে হেরেও যায় এবং সেটা খুব বড় ব্যবধানে নয় এবং নেদারল্যান্ডস শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দেয় তাহলেও নেট রানরেটে বাংলাদেশই এগিয়ে থাকবে। তখন টাইগাররা ডাচদের পেছনে ফেলে চলে যাবে সেরা আটে।
সব কথার শেষ কথা, নেপালের বিপক্ষে জিতলেই সব সমীকরণ বাদ দিয়ে বেশি পয়েন্ট অর্থাৎ ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ-ডি থেকে ২য় দল হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে চলে যাবে সুপার এইটে। তখন বাংলাদেশের সুপার এইটে গিয়ে দেখা হবে ভারত, অষ্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের সঙ্গে।
এআরবি/এমএইচ/