ট্রেনে জানালার পাশে দাঁড়ানো নিয়ে তর্কের জেরে এক যাত্রীর কিল-ঘুসিতে নিহত হয়েছেন অপর যাত্রী ঝুমুর কান্তি বাউল। গত ৬ জুন সকালে নরসিংদী রেলস্টেশনে ঢাকা মেইল ট্রেনের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত যাত্রী চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকার হাফেজ মিয়ার ছেলে মনজুরকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে গ্রেফতার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
Advertisement
বিষয়টি জানার পর প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (কবি কামাল চৌধুরী) ৯ জুন নরসিংদীতে প্রয়াত ঝুমুর কান্তি বাউলের বাড়িতে যান। তিনি সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।
নিহত ঝুমুর কান্তি বাউল নরসিংদী শহরের বীরপুর এলাকার প্রত্যুত কুমার বাউলের ছেলে। তিনি কবি ও কথাশিল্পী স্নিগ্ধা বাউলের ভাই। ভাইকে হারিয়ে শোকাহত বোন তার ফেসবুক আইডিতে আবেগঘন একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন—
‘দাদা, গত বৃহস্পতিবারের মতো আজ সকালেও আকাশে মেঘ দেখে থমকে থাকলাম! না জানি আজ আবার আকাশ ভেঙে পড়ে কারো! আজ আটদিন তুই নেই—দিন কেটে যাচ্ছে, কান্না শুকিয়ে আসছে আর রাতে মৈথিলীর জ্বর আসছে। মেয়েদের কিছু হলে তো অস্থির হয়ে যেতি, এখন তবে এমন নির্বিকার কেন তুই!
Advertisement
আরও পড়ুন
৩০ বছর পর খুঁজে পেলেন তিন বান্ধবীকে শেষ কবে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় গেছেন?জানিস, কত কত মানুষ তোকে দেখতে আসলো! আমি তোর বুক চাপড়ে ডাকলাম, তবু তুই উঠলি না। নতুন উপন্যাস এলে, ঈদসংখ্যা এলে, আমি কার জন্য বয়ে নিয়ে যাবো। বইয়ের জন্য তো তোর মন পড়ে থাকতো অবসর সময়ে!
তোর অ্যালবাম নিয়ে বসেছিলাম! তোর চুল, হাতের নখ স্থবির হয়ে আসা নিশ্বাস সমস্ত ছবি হয়ে গেলো কেন রে! তুই তো জানিস না, আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই তোর পেনফ্রেন্ডের আসা গোপন চিঠিগুলো পড়ে ফেলেছিলাম! আচ্ছা, ওরা তোর নাম দেখে তোকে মেয়ে ভেবে চিঠি লিখতো তাই না!
মনে আছে তোর, স্কুলের জন্য তুই আমাকে সেই ছড়াটা মুখস্থ করালি—ছিপখান তিনদাড় তিনজন মাল্লা... আমি তো পুরোটা পারি। তবুও তুই কেন রাগ করে আছিস!
Advertisement
দাদা রে, পাটপাতার ঝোল, ডালের বড়া আর পান্তার স্বাদ তো পাল্টে যায়নি, তুই কেন চলে গেলি! জানিস, পৌলমী বলেছে, এখন ভালো করে পড়বে! ও বড় হয়ে প্রধানমন্ত্রী হবে। কেবল আমাকে বলেছে—আমি বাবা ডাকবো কাকে!
আমি এত প্রশ্নের জবাব তোকে ছাড়া কী করে দেব!’
এসইউ/জিকেএস