বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য সহায়তার হার বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বুধবার (১২ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
Advertisement
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর বাজেট ১২-১৪ শতাংশ বাড়ে, কিন্তু এবার আমরা দেখলাম প্রধানমন্ত্রী-অর্থমন্ত্রী বাজেট ৬ শতাংশ বাড়িয়েছেন। এর কারণ সঞ্চয়মুখী পদক্ষেপ নেওয়া। বিনিয়োগও একটু টেনে ধরা, বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি টেনে ধরা হয়েছে, এটা জনবান্ধবমুখী। যদিও বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য সহায়তার হার বাড়ানো হয়েছে, শিক্ষা স্বাস্থ্য খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাজেটে যাদের আয় যত বেশি তাদের করারোপ বেশি এবং যাদের আয় কম তাদের কর কম করা হয়েছে। করের আওতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
তিনি জানান, ২০২১-২২ এবং ২৩ সালে শুধুমাত্র জ্বালানি খাতে সরকারকে অতিরিক্ত সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। করোনা যদি না আসতো, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ যদি না হতো, তাহলে এ জ্বালানি বাবদ যে সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার তা কিন্তু আমাদের রিজার্ভে থাকতো। কোভিড আসার আগে শেখ হাসিনা সরকার ধারাবাহিকভাবে যে উন্নয়ন ঘটিয়েছেন সে সময় অর্থ️নীতি যে ভালো অবস্থানে ছিল যার ফলে আমরা কিন্তু কোভিডের পর এ অতিরিক্ত খরচ সামলাতে সক্ষম হয়েছি।
এসময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের তৈরি মিথের কথা উল্লেখ করে বলেন, এ বাজেট নিয়ে তারা বলেন ‘ঋণ করে ঘি খাওয়ার’ মতো বিষয়। কিন্তু তা নয়, এ বাজেটে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি রাখা হয়েছে সেটি বিদেশি ও দেশি উৎস থেকে ঋণ করা হবে, সেটি কিন্তু আমাদের জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ৫ শতাংশের মধ্যে যদি থাকে তাহলে কিন্তু তা বিলো স্ট্যান্ডার্ড। আমেরিকা কিন্তু জিডিপির ৬ শতাংশের ওপরে ঋণ করছে। আমাদের ঋণ সহনীয় মাত্রায় আছে।
Advertisement
২০০৮-০৯ সালে ৩৮ বিলিয়ন ডলার, এখন বাড়তে বাড়তে ১৪৯ বিলিয়ন ডলার হয়ে গেছে। ২০০৮-০৯ সালে জিডিপিও আকার ছিল ১১০ বিলিয়ন ডলার। এখন ১৪৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ, আর ৪২০ বিলিয়ন ডলার জিডিপির আকার। ৪২০ বিলিয়ন ডলার জিডিপি থাকা সত্তেও যদি এ ঋণ আমরা না করি তাহলে উন্নয়ন থেকে জনগণকে বঞ্চিত করা হবে।
খেলাপি ঋণের বিষয়ে আরাফাত বলেন, আমাদের বিরোধী দলের এমপিরা বলেন, আগে (২০০৮-০৯) খেলাপি ঋণ ছিল ২০ হাজার ৯৮ কোটি টাকা। তারা বলছেন, এখন তা হয়ে গেছে ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা, দুটোই সত্যি কথা। কিন্তু এখন যেটা বলা হলো না-সেটা হলো তখন কত টাকা ঋণ ডিসবাসমেন্ট হয়েছিল আর এখন কত টাকা হয়েছে? সেটা কিন্তু বলা হলো না।
খেলাপি ঋণ ছিল ২০ হাজার ৯৮ কোটি টাকা, তখন ঋণ ডিসবাসমেন্ট ছিল ১ লাখ ৫২ হাজার ১৫৭ হাজার কোটি টাকা। তখন খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৩ শতাংশের ওপরে ছিল। কিন্তু এখন যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ তার বিপরীতে ঋণ ডিসবাসমেন্টের পরিমাণ ১১ শতাংশের নিচে। অর্থাৎ খেলাপি ঋণ কমেছে। এটা অনেকাংশেই কম। তবে তা আরও কমানোর জন্য অর্থমন্ত্রী নিশ্চয়ই পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
আইএইচআর/এমআইএইচএস/জিকেএস
Advertisement