তাওয়াফ শব্দের অর্থ ঘোরা বা প্রদক্ষিণ করা। পরিভাষায় তাওয়াফের নিয়ত করে পবিত্র কাবা ঘরের হাজরে আসওয়াদের কোনা থেকে শুরু করে চারপাশে সাত বার ঘোরাকে তাওয়াফ বলা হয়। তাওয়াফ হজ ও ওমরাহর অপরিহার্য আমল। ওমরাহর সময় পবিত্র কাবা ঘর তাওয়াফ করা ফরজ। হজের সময় তাওয়াফে জিয়ারত করা ফরজ। আরাফায় অবস্থানের পর এ তাওয়াফ করতে হয়।
Advertisement
তাওয়াফের সময় জিকির করা, বিভিন্ন দোয়া পাঠ করাই উত্তম যেভাবে নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তার সাহাবিরা করতেন। তাওয়াফের সময় কোরআন তিলাওয়াত করা জায়েজ। তবে অনেকে সুন্নতের বিপরীত হওয়ায় মাকরুহ বা অপছন্দনীয় বলেছেন। ইয়াহইয়া আলবাক্কা (রহ.) বলেন, সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এক ব্যক্তিকে তাওয়াফ অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করতে দেখে তাকে বারণ করেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১৫৪২৪)
লায়স (রহ.) বলেন, তাবেঈ মুজাহিদ (রহ.) তাওয়াফ অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা পছন্দ করতেন না। বরং সে (তাওয়াফের সময়) আল্লাহর যিকির, হামদ ও তাকবীর বলবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ১৫৮৭৮)
তাই তাওয়াফের সময় কোরআন তিলাওয়াত না করে অন্যান্য দোয়া ও জিকির করাই ভালো। তাওয়াফের বাইরে মক্কায় অবস্থানকালীন সময়ে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। তাবেঈ ইবরাহিম নাখঈ (রহ.) বলেন, সাহাবা-তাবেঈগণ মক্কায় প্রবেশের পর সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের আগে কোরআন খতম করতে পছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৮৮৬২)
Advertisement
তাওয়াফের সময় যে কোনো দোয়া পড়া যায়। তাওয়াফের এমন কোনো নির্দিষ্ট দোয়া নেই যা না পড়লে তাওয়াফ শুদ্ধ হবে না। হাদিসে কয়েকটি দোয়া পাওয়া যায় যা রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাওয়াফের সময় পড়েছেন।
রুকনে ইয়ামানি থেকে হাজরে আসওয়াদের দিকে যাওয়ার সময় আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোরআনে উল্লেখিত এ দোয়াটি পড়েছেন বলে বর্ণিত রয়েছে:
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা ফিদ-দুনিয়া হাসানাহ ওয়া ফিল-আখিরাতি হাসানাহ ওয়া কিনা আযাবান-নার
Advertisement
অর্থ: হে আমাদের রব, আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দিন, আখেরাতেও কল্যাণ দিন এবং আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন। (সুরা বাকারা: ২০১) (সুনানে আবু দাউদ: ১/ ২৬০)
ওএফএফ/জেআইএম