অর্থনীতি

আমরা বাস করি মাটিতে, বিনিয়োগ করি পাতালে: এম এ মান্নান

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনকালে নিজের মতের বিরুদ্ধে অনেক প্রকল্প অনুমোদন দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘এমন প্রকল্প আমার হাত দিয়ে গেছে বা যাচ্ছে যেগুলোর সঙ্গে আমি মনে-প্রাণে একমত নই। আমরা বাস করি ভূতলে (মাটিতে), বিনিয়োগ করি পাতালে। এ ধরনের অনেক প্রকল্প বাংলাদেশে আছে।’

বুধবার (১২ জুন) দুপুরে রাজধানীর এক হোটেলে সিপিডির বাজেট সংলাপ- ২০২৪ এ এসব কথা বলেন তিনি।

সাবেক এই পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমার নিজের বক্তব্য। এ মুহূর্তে আমি সরকারের অংশ নই। রাজনৈতিকভাবে দলে ও সংসদে আছি। সাধারণ মানুষ ও গ্রামীণ এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছি। আমরা গ্রামে বিদ্যুৎ পেয়েছি, কমিউনিটি ক্লিনিক পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী এসব দিয়েছেন। কৃষিতে আমাদের বিশাল অর্জন হয়েছে।’

Advertisement

প্রকল্প বাস্তবায়নে ১০ বছরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, ‘বাজেটে কোথায় ব্যয় করছি, সেখান থেকে আমরা কী পাচ্ছি- এসব বিচার করা দরকার। আদৌ কোনো রিটার্ন পাচ্ছি কি না দেখা দরকার। আমরা বাস করি ভূতলে, বিনিয়োগ করি পাতালে। এই প্রবণতা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন আছে। অনেক জায়গায় আমরা সাপ্লাই কিল করি, ডিমান্ড কিল করি।’

আরও পড়ুন

দেশে কমেছে কোটিপতির সংখ্যা  দাগি বড়লোকদের গলায় পা দিয়ে কর দিতে বাধ্য করেন 

তিনি বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে জড়িত ছিলাম প্রায় ১০ বছর। আমার অনেক ব্যক্তিগত আপত্তি আছে। যেহেতু আমি টিম ওয়ার্কার, ক্যাপ্টেন, আমার দল- এ জন্য আমার মানা উচিত, না হলে আমি আছি কেন দলের সঙ্গে। রাজনৈতিকভাবে বৃহত্তর অর্থে আমি তার সঙ্গে আছি। কিন্তু এখানে ফাঁকফোকরে কোনো কোনো জায়গায় আমার ভিন্নমত অবশ্যই আছে। এমন প্রকল্প আমার হাত দিয়ে গেছে বা যাচ্ছে যেগুলোর সঙ্গে আমি মনে-প্রাণে একমত নই।’

এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি আমাদের কষ্ট দেয়। কিন্তু আমার কমন সেন্সে বলছি, আমাদের মূল্যস্ফীতি লতানো (ক্রিপিং), পায়ে পায়ে এগুচ্ছে। এটা যদি দ্রুতগতির হতো, বল্গাহীন হতো- ছোবল কত বেশি হতো? ছোবল কত বেশি হতো তা অচিন্তনীয়।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় প্রবৃদ্ধির একটা বাইপ্রোডাক্ট এই মূল্যস্ফীতি। একটাকে ছেড়ে আরেকটা করা যাবে না। প্রবৃদ্ধি না করলে আমাদের জীবনযাত্রা নিচে নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে যাবে, কিন্তু আমাদের সবকিছু নেমে আসবে। এই ঝুঁকি আমাদের নিতে হবে। বড় অর্থনীতির দেশগুলো এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছে।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো ও বৈদেশিক মুদ্রা অবনমন- সেটা ধরে রাখার চেষ্টা, এই দুই ব্যাপারে বাজেটে তেমন একটা পদক্ষেপ দেখিনি। বাজেটে অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে যেসব লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে, এসব লক্ষ্যমাত্রা বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাস্তবায়নযোগ্য নয়।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান প্রমুখ।

এসএম/কেএসআর/জিকেএস