ভ্রমণ

৩০০ ফিট গিয়ে ঘুরে আসুন নীলা মার্কেটের মেলায়

রাজধানীর যান্ত্রিক কোলাহল থেকে দূরে ৩০০ ফিটের দিকে অবস্থিত নীলা মার্কেট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর স্থানটি এখন হয়ে উঠেছে শহুরে মানুষের নিত্যদিনের গন্তব্য।

Advertisement

বয়ে চলা নদী, শ্যামলীমা ছড়ানো গাছপালা, আর সারি সারি টিনের বাড়ি-ঘর মিলে নীলা মার্কেটকে দিয়েছে এক অনন্য নৈস্বর্গিক রূপ। নীলা মার্কেটের নাম শুনলে প্রথমেই চোখে ভেসে ওঠে হাঁসের মাংস আর চিতই পিঠার কথা। এখানকার খাবারের স্বাদে অনেকেই বারবার ফিরে আসেন।

বিশেষ করে হাঁসের মাংসের ঝোল আর চিতই পিঠার মিশ্রণ যেন স্বাদে অতুলনীয়। এছাড়া সারি সারি সাজানো মিষ্টির দোকানও নীলা মার্কেটকে দিয়েছে আলাদা আকর্ষণ।

এবারের যাত্রায় নীলা মার্কেটের অন্যতম আকর্ষণ মনে হয়েছে স্থানীয় মেলা। আমরা তিন বন্ধু হঠাৎ করেই ঠিক করলাম যান্ত্রিক জীবনের কোলাহল থেকে কিছুটা দূরে, নীলা মার্কেটে ঘুরে আসবো। তবে এবারই প্রথম মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ হলো।

Advertisement

মেলার প্রবেশপথে সাজানো কোনো ফটক নেই। নেই কোনো প্রবেশ মূল্য। ফটকের চারপাশে শোভা পাচ্ছে রং-বেরঙের আলোকসজ্জা। চারপাশে কোলাহল। ছোট-বড় নানা খাবার-খেলনার দোকান, গহনা, প্রসাধনীর দোকান, বিশাল সাউন্ড বক্সে বাজানো গান মিলিয়ে মেলার পরিবেশ ছিল প্রাণবন্ত।

আরও পড়ুন

সীতাকুন্ড ভ্রমণে ঘুরে দেখুন ঝরঝরি’সহ চার ঝরনা  ছুটির দিনে ঘুরে আসুন নাটোরের গ্রিন ভ্যালিতে 

মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন রাইড। নাগরদোলা, ফেরিস হুইল, মিনি ড্রাগন ট্রেন, বাউন্সি ক্যাসল, পাইরেট শিপ ও ট্রাম্পোলিন ইত্যাদি। ফেরিস হুইলে ওঠার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত রোমাঞ্চকর।

উচ্চতায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে নীলা মার্কেটের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যগুলো উপভোগ করা যায়। একদিকে মৃদু বাতাসের স্পর্শ, অন্যদিকে ধীরে ধীরে উপরে ওঠার উত্তেজনা মিলে এক সুন্দর অনুভূতি।

Advertisement

আর ছোটদের জন্য মিনি ড্রাগন ট্রেন, বাউন্সি ক্যাসল, পাইরেট শিপ ও ট্রাম্পোলিন আনন্দদায়ক রাইড। মেলার অন্য আরেকটি আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন তৈজসপত্রের দোকান। হাতে তৈরি নানা জিনিসপত্রের পাশাপাশি রকমারি পণ্য পাওয়া যায়, যা দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে।

দোকানজুড়ে শুধু মাটির, কাঁচের, ধাতুর কাঠ ও বাঁশের তৈরি তৈজসপত্র। এসব দোকানে কেনাকাটা করতে গিয়ে দর্শনার্থীরা প্রায়ই উপহারের জন্যও সুন্দর কিছু বেছে নেন।

নীলা মার্কেটের এই মেলায় কাটানো সময়টুকু সত্যিই স্মরণীয়। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, মেলার প্রাণবন্ত পরিবেশ, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, মানুষের আন্তরিকতা শেষে বিখ্যাত হাঁসের মাংসের সঙ্গে চিতই খাওয়া সব মিলিয়ে এক অসাধারণ বিকেল কেটে গেল।

নীলা মার্কেটের মেলা আমাদের জীবনে এক নতুন অধ্যায় যোগ করলো। যান্ত্রিক জীবনের একঘেয়েমি থেকে কিছুটা মুক্তি মিললো। নীলা মার্কেট শুধু একটি দর্শনীয় স্থান নয়, এটি একটি অনুভূতি ও স্বপ্নময় স্থান। যেখানে সবাই একত্রে আনন্দ উপভোগ করতে পারে।

জেএমএস/জিকেএস