দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মাঝে স্বাস্থ্যখাতে সর্বনিম্ন খরচ করে বাংলাদেশ সরকার। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে খরচ হয় ৮১ ডলার ও পাকিস্তানে খরচ হয় ৪৯ ডলার। সেখানে বাংলাদেশে খরচ হয় মাত্র ২৬ ডলার।
Advertisement
২০৩২ সালের মধ্যে স্বাস্থ্যখাতে ব্যক্তি পকেট খরচ ৩২ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য সরকারের। দেশে এ চিত্র উল্টো দিকে ছুটছে। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তির পকেট খরচের দেশগুলোর মধ্যে ষষ্ঠতম। দেশে ২০২১ সালের স্বাস্থ্যখাতে ব্যক্তি পকেট খরচ ছিল ৭৩ শতাংশ।
মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার ভবনে স্বাস্থ্যখাতে খরচ, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার একটি বড় প্রতিবন্ধকতা শীর্ষক রাউন্ড টেবিল বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল হেলথ অ্যাক্সপেন্ডেচারের দেওয়া তথ্য তুলে ধরে এসব কথা জানান বক্তারা।
এ অবস্থায় দেশের স্বাস্থ্যখাতে রেভ্যুলেশন (ফোরআইআর) দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের রাজনৈতিক নীতিনির্ধারকদের দেশেই চিকিৎসা করাতে হবে এমন একটি নিয়ম স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারে। তারা যখনই প্রয়োজন দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যায়। কিন্তু তারা যদি না যেতে পারতো তাহলে দেশেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করতো বলে জানান তারা।
Advertisement
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সাংবাদিক শিশির মোড়ল বলেন, চিকিৎসা ব্যয় কমাতে হলে রাষ্ট্রীয় ওষুধ প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে (ইডিসিএল) শক্তিশালী এবং সরকারী ভাবে জন-গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ উৎপাদন বাড়াতে হবে। বর্তমানে নতুন করে ওষুধ কোম্পানিরা ওষুধের দাম বাড়ানোর কথা বলছে। এ বিষয়ে শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে যে বাজেট হয়েছে তা অপ্রতুল। এখাতে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন হয়। সে অনুযায়ী আমরা পেয়েছি মাত্র ৫.২ শতাংশ। সাধারণত বাংলাদেশে বাজেটে বরাদ্দ হয় তা মন্ত্রণালয়কে বলে দেয়া হয় অগ্রিম যে এই পরিমাণ তোমার জন্য বরাদ্দ, এর মাঝে কাজ করতে হবে। আর প্রতিবছর যা বরাদ্দ থাকে তার থেকে ৫ থেকে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করা। এভাবেই বরাদ্দ করা হয়, যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চাইলেও এর বাহিরে যেতে পারেনা যদি খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না থাকে। এরপর স্বাস্থ্য বিভাগ ও তার অধীনে প্রতিষ্ঠান গুলোকে শেষ বারের বরাদ্দ বিবেচনা করে একটি বরাদ্দ দিয়ে দেয়। এর ফলে যেটা প্রয়োজন তা পূরণ হয়না।
এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বক্তারা জানান, যারা পরিবর্তন করবে তারা দেশে চিকিৎসা নেন না। জনবল নিয়োগ, নজরদারি, জবাবদিহিতা, স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্তকরণ, জনপ্রতিনিধিকে সম্পৃক্তকরণ করতে হবে।
তারা জানান, দীর্ঘমেয়াদি রোগাক্রান্তদের পকেট ব্যয় ৪২ শতাংশ বেশি। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা ব্যয় তিনগুণ বেশি।
Advertisement
এএএম/এমএএইচ/