লাইফস্টাইল

সবার ব্র্যান্ড হতে চায় ‘সারা’

‘পণ্যের নিত্যনতুন ডিজাইন, গুণগত মান ও সহনশীল দামের জন্য ফ্যাশন সচেতন মানুষের কাছে জনপ্রিয় একটি নাম ‘সারা’। আমরা এ অর্জনকে ধরে রাখতে আমাদের আউটলেট ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাই।’

Advertisement

এভাবেই সারা লাইফস্টাইলের সফলতার গল্প ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক শরীফুন রেবা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের ইব্রাহীম হুসাইন অভি।

কেন বাংলাদেশে পোশাক ব্র্যান্ডের চাহিদা বাড়বে এবং সারা কীভাবে ক্রেতাদের মন জয় করবে? মানুষের আয় বৃদ্ধি ও শিক্ষার বিকাশের সঙ্গে রুচিরও পরিবর্তন হয়েছে। সামাজিক অবস্থান, রুচিবোধের কারণে ফ্যাশন ও ব্র্যান্ডপ্রীতি বেড়েছে বহুগুণ। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ফ্যাশনের প্রতি ঝোঁক বেশি।

এ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলছে। তাই ফ্যাশন সচেতন মানুষের জন্যই আমাদের এই ব্র্যান্ড। শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল সহনশীল দামে মানসম্মত ও হাল ফ্যাশনের পোশাক ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরা।

Advertisement

কয়েক বছর ধরে আমরা ফ্যাশন সচেতন মানুষের হাতে মানসম্মত পোশাক উপহার দিতে পেরেছি বলেই আজ সারা দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘সারা’। পণ্যের গুণগত মান ও নিত্যনতুন ডিজাইনের জন্য সবার কাছে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা অত্যন্ত জনপ্রিয়।

সারার সাব-ব্র্যান্ড ‘ঢেউ’ কেমন সাড়া পাচ্ছে?

বিশ্বায়নের ফলে ফ্যাশন এখন আর কোনো নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। প্রযুক্তির কল্যাণে মুহূর্তেই মানুষ জানতে পারে দ্রুত পরিবর্তনশীল ফ্যাশন সম্পর্কে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাশ্চাত্যের পোশাকের প্রতি মানুষের আগ্রহ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। নতুন প্রজন্মের চাহিদা মেটাতে আমরা দেশীয় ও পাশ্চাত্যের ফিউশনে তৈরি করছি বিভিন্ন ধরনের পোশাক। এর নাম দিয়েছি ‘ঢেউ’, যা সারার সাব-ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত এবং এটা নতুন প্রজন্মের কাছে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এই সাব-ব্র্যান্ডের মাধ্যমে আমাদের নিজস্ব ডিজাইনারের তৈরি ওয়েস্টার্ন পোশাক ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।

Advertisement

‘সারা’ এরই মধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে। আপনাদের সিগনেচার প্রোডাক্ট কী? শীতের বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট ও পণ্য রয়েছে। আমাদের সিগনেচার প্রোডাক্ট হলো শীতের পোশাক, বিশেষ করে জ্যাকেট। আমাদের শীতকালীন পোশাকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী ডিজাইন করা। যেমন ঢাকায় বসবাসকারী একজন মানুষের প্রয়োজন হালকা জ্যাকেট। কারণ এখানে শীত অন্য এলাকার চেয়ে কম। আবার রাজশাহী কিংবা দিনাজপুরের মানুষের প্রয়োজন ভারী অর্থাৎ, মোটা জ্যাকেট। কারণ ওখানে শীত অনেক বেশি।

নতুন প্রজন্মের চাহিদা মেটাতে আমরা দেশীয় ও পাশ্চাত্যের ফিউশনে তৈরি করছি বিভিন্ন ধরনের পোশাক। এর নাম দিয়েছি ‘ঢেউ’, যা সারার সাব-ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত এবং এটা নতুন প্রজন্মের কাছে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে

অন্য পোশাকের ক্ষেত্রেও ডিজাইন ও চাহিদার ভিন্নতা থাকে। তাই আমাদের লক্ষ্য সবার ব্র্যান্ড হওয়া। অবশ্যই সেটা মান, ডিজাইন ও দাম মানুষের সাধ্যের মধ্যে রেখে।

শুধু দেশীয় নয়, প্রাচ্যের সংমিশ্রণে আমরা নতুন প্রজন্মের এবং ফ্যাশন সচেতন মানুষের জন্য তৈরি করছি পছন্দসই পোশাক। আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি হচ্ছে ক্যাজুয়াল কিংবা ফরমাল পোশাক। কোরবানির ঈদে ক্রেতাদের জন্য কী ধরনের পণ্য বাজারে এনেছেন। ক্রেতাদের জন্য এবারের বিশেষ আকর্ষণ কী?

ফ্যাশন সচেতন ক্রেতারা সব সময়ই নতুনত্ব খোঁজে। আমরা সব সময় ক্রেতাদের পছন্দের গুরুত্ব দেই। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ক্রেতাদের কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য দিতে এবার ঈদে আমাদের মূল আকর্ষণ সারা, ঢেউয়ের সব প্রোডাক্টে ৩০ শতাংশ ছাড়। সারার সব আউটলেটে সব ধরনের প্রোডাক্টে সবাই ৩০ শতাংশ ছাড়ে পণ্য কিনতে পারবেন।

এ বিশেষ আয়োজনের মূল লক্ষ্যই হলো ক্রেতারা যেন আমাদের প্রতি আরও বেশি আকৃষ্ট হন। ক্রেতাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই কম দামে গুণগতমানের প্রোডাক্ট কাস্টমারদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই ৩০ শতাংশ ছাড়।

ব্যবসা সম্প্রসারণ নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

কনজ্যুমাররা আমাদের ব্যবসার প্রাণ। তাদের ভালোবাসায় আজকের অবস্থানে আমরা। বর্তমানে সারার ১৪টি স্টোর রয়েছে, তার মধ্যে ঢাকায় আটটি ও ঢাকার বাইরে ছয়টি। ক্রেতাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও সারার প্রতি ভালোবাসার কথা মাথায় রেখে আমরা এ বছরের মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেশকিছু আউটলেট খুলবো। খুলনায় শিগগির নতুন আউটলেটে খোলা হবে। আমরা জায়গাও নির্ধারণ করেছি এবং কাজ শুরু করেছি।

বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডের পোশাক এখানে তৈরি হয়। কিন্তু আমাদের নিজস্ব কোনো ব্র্যান্ড দেশের বাইরে নেই। এর মানে এই নয় যে হবে না। আমাদের ইচ্ছা ও স্বপ্ন দুটোই আছে, সঙ্গে সামর্থ্য

সারাকে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড করার পরিকল্পনা আছে কি?

বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডের পোশাক এখানে তৈরি হয়। কিন্তু আমাদের নিজস্ব কোনো ব্র্যান্ড দেশের বাইরে নেই। এর মানে এই নয় যে হবে না। আমাদের ইচ্ছা ও স্বপ্ন দুটোই আছে, সঙ্গে সামর্থ্য।

তবে এই মুহূর্তে সারা লাইফস্টাইল দেশের মানুষের কাছে পৌঁছাতে চায় আগে। দেশীয় বাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরির পর আমরা বৈশ্বিক বাজারে নজর দিতে চাই। এজন্য আমরা সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছি।

ঢাকার বাইরের একজন ক্রেতা কীভাবে আপনাদের পণ্য কিনতে পারবে?

একজন ক্রেতা দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সারার যে কোনো পণ্য কিনতে পারেন। আমাদের ওয়েব পোর্টাল থেকে পণ্য পছন্দ করে অর্ডার করলে ঘরে বসেই একজন ক্রেতা তার পছন্দের পণ্যটি পেয়ে যান। আমরা ফিজিক্যাল ও অনলাইনে একই পণ্য প্রদর্শন করি। দামের ক্ষেত্রেও কোনো পার্থক্য নেই।

আইএইচও/এএসএ/এমএস