ইউনিসেফের সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের শিশু ও নারীদের অবস্থার ওপর পারিবারিক জরিপ শুরু করেছে। এই জরিপের মাধ্যমে নারী-শিশুর রক্তে সীসার মাত্রা ও রক্তশূন্যতাসহ একাধিক তথ্য জানা যাবে। মঙ্গলবার (১১ জুন) মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস), রাউন্ড ৭ (২০২৪-২৫) চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
Advertisement
এবারের জরিপে কিছু নতুন বিষয় রয়েছে যেমন- এমআইসিএসের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো রক্তে সীসার মাত্রা (বিএলএল), ভারী ধাতুর মাত্রা, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের মাত্রা এবং রক্তশূন্যতা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা।
জরিপে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পানি, স্যানিটেশন, শিক্ষা ও শিশু সুরক্ষা বিষয়ে প্রায় ২০০টি সূচক অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ২০২০-২৫ মূল্যায়নে জরিপের উপাত্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিবিএস বলছে, চারপাশে সীসাসহ ভারী উপাদানের উপস্থিতি শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তবে পরিবেশগত এই ঝুঁকি সময় মতো নির্ণয় ও মোকাবিলার মাধ্যমে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি তিন শিশু মৃত্যুর একটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
Advertisement
বিবিএস জানায়, এমআইসিএস পরিচালনায় বিবিএস ও ইউনিসেফ কয়েক দশক ধরে একসঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশে প্রথম এমআইসিএস পরিচালিত হয় ৩০ বছর আগে। এই জরিপগুলো দেশের নারী ও শিশুর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এই উপাত্ত ভাণ্ডার শিশুদের অধিকার রক্ষায় পরিবর্তনকারী নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি ইউনিসেফের, নীতিনির্ধারকদের, সরকারের ও অংশীজনের কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, আমি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং ইউনিসেফকে অভিনন্দন জানাই মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার জরিপ শুরু করার জন্য। যা আমাদের দেশে শিশু এবং সুবিধাবঞ্চিত নারীদের চাহিদার বিষয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ করবে। এই জরিপের ফলাফল আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার তথ্যের ঘাটতি পূরণ করতে এবং সময়োপযোগী তথ্যের মাধ্যমে কার্যকর পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন সক্ষম করবে।
বিবিএস জানায়, ১৯৯০-এর দশকে ইউনিসেফ প্রথম এমআইসিএসের সূচনা করে। গ্লোবাল মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস) প্রোগ্রামের লক্ষ্য ছিল দেশগুলোকে শিশু ও নারীদের আন্তর্জাতিকভাবে তুলনামূলক তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করা। ২০১৯ সালে এমআইসিএস ৬৪ হাজার পরিবারে জরিপ করেছে এবং শিশু ও নারীদের জন্য ১৪৪টি সূচক তৈরি করেছে, যার মধ্যে ২৯টি সরাসরি রয়েছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সঙ্গে মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের পরবর্তী ধাপে কাজ করতে পেরে ইউনিসেফ গর্বিত। এই জরিপ প্রতিটা শিশুর প্রয়োজন ও তাদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি জরিপ থেকে প্রাপ্ত মূল্যবান তথ্য বাংলাদেশের শিশু ও তাদের পরিবার অনেক তথ্য জানবে।
Advertisement
এমওএস/জেডএইচ/এমএস