আইন-আদালত

সুপ্রিম কোর্ট বারের ক্যান্টিনে গরুর গোশত রান্নার আবেদন

আইনজীবীদের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনগুলোতে গরুর গোশত রান্না করার অনুমতি দিতে আবেদন করা হয়েছে।

Advertisement

সোমবার (১০ জুন) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) সম্পাদক বরাবর আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের কেরালা রাজ্যের হাইকোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে অন্যান্য খাবার আইটেমের পাশাপাশি গরুর গোশতের নানাবিধ আইটেম পাওয়া যায়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস পাওয়া যায় না। গরুর মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।

আবেদনে আরও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে গরুর মাংস খাওয়া প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে যে খাসির মাংস পাওয়া যায়, তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং পরিমাণে কম। এছাড়া পোলট্রি ও সোনালি মুরগির মাংস মানসম্মত নয়।

Advertisement

‘সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের, বিশেষ করে তরুণ আইনজীবীদের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস রান্না করার অনুমতি দেওয়া আবশ্যক। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় এই যে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বাধার কারণে ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস রান্না করা হচ্ছে না। গরুর মাংস বাংলাদেশে বৈধ একটি খাবার। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস রান্না করতে বাধা প্রদানের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বৈধ খাদ্যগ্রহণে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং আইনজীবীদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, যাহা বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের অনুচ্ছেদ ৩২ এর জীবনের অধিকারের লঙ্ঘন।’

আরও পড়ুন

এবার সুপ্রিম কোর্টের রেস্টুরেন্টে পচা মুরগি  পেঁয়াজুতে পিন, সুপ্রিম কোর্টের ক্যান্টিনকে এক লাখ টাকা জরিমানা 

আবেদনে বলা হয়, মুষ্টিমেয় কিছু ব্যাক্তি, যারা গরুর মাংস খেতে চায় না, তাদের জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস রান্না করতে বাধা প্রদান করা সম্পূর্ণ বেআইনি, অসাংবিধানিক, কারণ এর মাধ্যমে আইনজীবীদের প্রযোজনীয় পুষ্টি গ্রহণে সরাসরি বাধা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সংবিধানের মৌলিক অধিকার অনুচ্ছেদ ৩২ এ বর্ণিত ‘জীবনের অধিকার’ লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বিশ্বাসগত কারণে যারা গরুর মাংস খেতে চান না, তাদের জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনগুলোতে কিছু আলাদা চেয়ার, টেবিল বরাদ্দ রাখা যেতে পারে।

এছাড়া আমাদের বন্ধুপ্রতিম পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সবচেয়ে শিক্ষিত রাজ্য কেরালার হাইকোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে যেহেতু গরুর মাংসের বিভিন্ন আইটেম বিক্রি হয়, সেহেতু এখানে আমাদের Legitimate Expectation (বৈধ প্রত্যাশা) আছে যে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সব ক্যান্টিনে গরুর মাংস রান্না করার অনুমতি দেওয়া হোক।

Advertisement

অতএব, উক্ত আবেদনের সাতদিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস রান্নার অনুমতি প্রদান করে বাধিত করবেন।

আবেদনের বিষয়ে আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, সাতদিনের মধ্যে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এর প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।

এর আগে, ২০২১ সালের ২ জুন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক বরাবর একই ধরনের আবেদন করেন আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে গরুর গোশত রান্নার ঘটনায় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সুপ্রিম কোর্ট শাখার নেতারা প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে ক্যান্টিনে গরুর গোশত রান্না বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সমিতির বর্তমান কমিটির প্রতি আহ্বান জানান তারা। আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি বিভাস চন্দ্র বিশ্বাসসহ চার আইনজীবী ওই আবেদন করেন।

এফএইচ/এমএইচআর/জিকেএস