বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের অধীনে মাসে ৬০ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সিয়াম হোসেন। পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দাদের কাছে এ কথা জানিয়েছেন সিয়াম নিজেই। তবে তিনি ঠিক কী ধরনের কাজ করতেন, তা নিশ্চিত নয়।
Advertisement
গত শুক্রবার (৭ জুন) বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ এলাকা থেকে সিয়ামকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)। অনেক নাটকীয়তার পর ওইদিন রাতে সিআইডি জানায়, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি সিয়ামকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন>>
পশ্চিমবঙ্গে সিআইডির হাতে সিয়াম গ্রেফতার ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতে সিয়ামপরে তাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালান তদন্তকারীরা। রোববার সিয়ামকে নিয়ে ফের ভাঙ্গরের সাটুলিয়া কৃষ্ণমাটি ও জিরানগাছা বাগজোলা খালে তল্লাশি চালান সিআইডি, ভারতীয় নৌবাহিনী ও কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় খালের একটি অংশ থেকে বেশ কিছু হাড় উদ্ধার করেন তারা। হাড়গুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
সিআইডির সূত্র জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম হোসেন বলেন, এমপি আনার হত্যার মামলায় প্রধান অভিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান শাহীনের অধীনে মাসে ৬০ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন তিনি।
জেরার মুখে সিয়াম আরও জানিয়েছেন, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র, ট্রলিব্যাগ, পলিথিন সব কিছুই কেনা হয়েছিল কলকাতার নিউমার্কেট এলাকা থেকে। এমপির দেহাংশের মাংস কিমা করার জন্য একটি মেশিনও কিনে এনেছিলেন অন্য দুই অভিযুক্ত ফয়সাল এবং মুস্তাফিজ।
এমপি আনারকে শ্বাসরোধে হত্যা করার পর তার দেহের হাড় ও মাংস আলাদা করা হয়। পরে সেই মাংস ছোট ছোট টুকরো এবং কিমা করা হয় ওই মেশিন দিয়ে। মেশিনটি কোথায় রয়েছে তা ফয়সাল জানেন বলে দাবি করেছেন সিয়াম হোসেন।
যদিও এখন পর্যন্ত এমপি আনারের মাথার খুলি এবং হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এছাড়া, যে ট্রলি ব্যাগে করে আনারের দেহাংশ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেটিরও হদিশ মেলেনি। এগুলোর খোঁজে সিয়াম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি।
Advertisement
সিআইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাগজোলা খালের যে অংশে এমপির আনারের দেহাংশ ফেলা হয়েছিল, সেখানে আরও কয়েক ধাপে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হবে। আশা করা হচ্ছে, এতে আরও কিছু দেহাংশ মিলতে পারে।
ডিডি/কেএএ/