দেশজুড়ে

গাইবান্ধায় পশুরহাট দেশি গরুতে ভরপুর

গাইবান্ধায় জমে উঠছে কোরবানির পশুরহাট। প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে। হাটে পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশি গরু-ছাগল উঠতে শুরু করেছে। তবে বেচাকেনা কম।

Advertisement

জেলায় এবার ৪১ স্থানে কোরবানির পশু কেনাবেচার হাট বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি স্থায়ী ও ১৫টি অস্থায়ী হাট রয়েছে। এছাড়া সাতটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও পশু কেনা-বেচা হচ্ছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্র জানায়, জেলায় এক লাখ ২৩ হাজার ৫১টি কোরবানি পশুর চাহিদার বিপরীতে ২২ হাজার ৩৩০টি পশু বেশি রয়েছে। যা দেশের বিভিন্ন জায়গা কোরবানি পশুর চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। জেলার ১৬ হাজার ৭৫৯ জন কৃষক ও খামারির কাছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮১টি কোরবানি যোগ্য পশু মজুত রয়েছে। এরমধ্যে গরু ৬৩ হাজার ২৪৬টি, মহিষ ১৪৭টি ও ছাগল-ভেড়া ৮১ হাজার ৯৮৮টি। কোরবানি পশুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কাজ করছে ২১টি মেডিকেল টিম।

সরেজমিনে জেলার সদর উপজেলার দারিয়াপুর, সাঘাটার ভরতখালী, পলাশবাড়ী মাঠেরহাট, গোবিন্দগঞ্জের নাকাইহাট পশুরহাট ঘুরে দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন চর এলাকাসহ পাশের কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী, রাজিবপুরসহ গাইবান্ধার বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাক, নসিমন, ভটভটিসহ নানা রকম যানবাহনে হাটে কোরবানির পশু নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। হাটে আগত গরুর বেশির ভাগই দেশি। হাটে দেশি পশু দিয়ে ভরে গেছে।

Advertisement

পশু বিক্রেতারা বলছেন, হাটে ক্রেতারা আসছেন। কিন্তু দাম জিজ্ঞাসা করেই তারা চলে যাচ্ছেন। এ বছর ক্রেতাদের অনেকে বাজারে পশুর দরদাম যাচাই করে দেখছেন। আবার অনেকে পশু কিনতে হাটে এসেছেন। তবে অনেকে কিনছেন।

এবার অধিকাংশ ক্রেতা খুঁজছেন মাঝারি আকারের গরু। হাটে আসা এসব গরু ৮০ থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে। তবে পশুরহাটে এবার ভারতীয় গরু না থাকায় দেশি গরুর চাহিদা ও দামও কিছুটা বেড়েছে। ক্রেতারা দাম বাড়ার কথা বললেও ভিন্ন কথা বলছে পশু বিক্রেতারা।

পশু বিক্রেতা আব্দুল গোলজার মণ্ডল বলেন, গত বারের তুলনায় এবার গরুর দাম বেশ কম। এছাড়াও পশুর খাবারের দামের তুলনায় বাজারে পশুর দাম অনেকটা কম বলে তার দাবি।

এদিকে জেলার খামারি ও কৃষকদের দেশীয় প্রযুক্তিতে মোটাতাজাকরণ করা উন্নতমানের দেশি গরু কিনতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাটে এসেছেন গরু ব্যবসায়ীরা। তারাও বলছেন, এবার গরুর দাম বেশি।

Advertisement

হাটে পশু নিয়ে আসা আবুল কালাম বলেন, কোরবানির হাট পরিপূর্ণ জমে ওঠতে আরও কয়েকদিন লাগবে। তখন দূর-দূরান্ত থেকে ব্যাপারীরা গরু-ছাগল নিয়ে আসবেন। বর্তমান হাটে যেসব গরু-ছাগল আসতে শুরু হয়েছে তার বেশিরভাগ স্থানীয়ভাবে লালনপালন করা।

হাটে আসা শফিক মিয়া নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ২০ কেজির মতো মাংস হবে। দাম হাঁকছেন ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া ক্রেতা-বিক্রেতারা হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, পশুরহাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প রাখা হবে। এছাড়া জাল নোট শনাক্ত করার মেশিনও থাকবে। কোরবানির জন্য নির্ধারিত পশুর হাটে হাসিলের পরিমাণ সাইনবোর্ডে লেখা থাকতে হবে। যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে হাট কমিটির লোকজন ও পুলিশ তৎপর থাকবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহফুজার রহমান জাগো নিউজকে বলেন, গরুকে দানাদার খাদ্য ও কাঁচা ঘাস খাওয়ানোর জন্য খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ভিটামিন খাওয়াতেও বলা হচ্ছে। তবে গরুকে নিষিদ্ধ কোনো রাসায়নিক ও হরমোন ওষুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আরএইচ/জেআইএম