ধর্ম

জিলহজের প্রথম দশকে রোজা রাখার ফজিলত

হিজরি ক্যালেন্ডারের সর্বশেষ মাস জিলহজ। হজের তিনটি মাসের মধ্যে জিলহজ প্রধানতম। এ মাসের ৮-১৩ তারিখ এই ছয় দিনেই হজের মূল কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। এ মাসের প্রথম দশক বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। কোরআনে আল্লাহ জিলহজের দশ রাতের শপথ করেছেন। আল্লাহ বলেন,

Advertisement

وَ الۡفَجۡرِوَ لَیَالٍ عَشۡرٍ وَّ الشَّفۡعِ وَ الۡوَتۡرِশপথ ভোরবেলার, শপথ দশ রাতের, শপথ জোড় ও বেজোড়ের। (সুরা ফাজর: ১-৩)

জাবের (রা.) আনহু বৰ্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এ আয়াতে দশ হচ্ছে জিলহজ মাসের দশদিন, বেজোড় হচ্ছে আরাফার দিন আর জোড় হচ্ছে কোরবানির দিন। (মুসনাদে আহমদ: ৩/৩২৭)

এ দশ দিন যে কোনো নফল আমলেরই সওয়াব বেড়ে যায়। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, অন্যান্য যে কোনো সময়ের তুলনায় জিলহজের প্রথম দশ দিনের নেক কাজ আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। (সহিহ বুখারি: ৯৬৯)

Advertisement

নফল ইবাদতসমূহের মধ্যে রোজা অন্যতম। তাই এ দিনগুলোতে অন্যান্য নফল ইবাদতের মতো রোজা রাখলেও বেশি সওয়াব পাওয়া যাবে তা উপরোক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায়। এ ছাড়া কিছু হাদিসে জিলহজের প্রথম নয় দিন রোজা রাখার বিশেষ ফজিলতও বর্ণিত হয়েছে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, এ দশ দিনের প্রতি দিনের রোজা এক বছরের রোজার এবং এর প্রত্যেক রাতের নামাজ কদরের রাতের নামাজের সমতুল্য। (সুনানে তিরমিজি: ৭৫৮)

উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) প্রতি বছরই জিলহজের প্রথম নয় দিন রোজা রাখতেন। তিনি বলেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কখনো চারটি আমল পরিত্যাগ করেননি। সেগুলো হলো, আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতি মাসে তিন দিন রোজা, ও ফজরের পূর্বের দুই রাকাত নামাজ। (সুনানে নাসাঈ: ২৪১৬)

এ নয় দিনের মধ্যে শেষ দিন অর্থাৎ জিলহজের নয় তারিখের রোজার ফজিলত সবচেয়ে বেশি। যে দিন আল্লাহ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে ক্ষমা করে দেন বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে । এ দিন রোজার ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আরাফার দিন কেউ রোজা রাখলে আমি আশাবাদী যে আল্লাহ তার পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। (সহিহ: ২৬১৭)

ইসলামে যে কোনো সাধারণ দিনের নফল রোজাই অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে বান্দা আল্লাহর রাস্তায় একদিন মাত্র রোজা রাখবে আল্লাহ ওই রোজার বিনিময়ে তাকে জাহান্নাম থেকে ৭০ বছরের পথ পরিমাণ দূরত্বে রাখবেন। (সহিহ বুখারি: ২৮৪০, সহিহ মুসলিম: ১১৫৩)

Advertisement

এ থেকে অনুমান করা যায় জিলহজের ফজিলতপূর্ণ দিনগুলোর রোজার সওয়াব বা প্রতিদান কত বেশি হবে। আল্লাহ আমাদের তওফিক দান করুন!

ওএফএফ/এমএস