লিবিয়া প্রবাসী এক যুবককে অপহরণ করে তাকে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। তারপরও মুক্তি না দিয়ে আরও ১৫ লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগে অপহরণ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
Advertisement
শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুনসী। এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিঘলদি এলাকার মৃত পণ্ডিত আলী বেপারীর ছেলে হাবিবুর রহমান সুমন (৩০) ও একই এলাকার দেলোয়ার হোসেন গাজীর ছেলে রবিউল আওয়াল রবি (২৮)।
অপহরণের শিকার মাসুদ (৪০) পাবনা সদর উপজেলার রামানন্দপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে।
Advertisement
অপহৃতের মা মলিনা খাতুনের বরাতে পুলিশ সুপার জানান, গত চার বছর ধরে লিবিয়ার সিটি খলিফা এলাকায় দর্জির দোকান পরিচালনা করে আসছিলেন মাসুদ। গত ১৩ মে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা অবস্থায় তিনি বলেন, পরে কথা হবে। এরপর আর কথা বলেননি। পরের দিন সকালে একটি ইমো নম্বর থেকে মাসুদের স্ত্রীর ইমো নম্বরে ফোন করে জানানো হয়, তার স্বামীকে অপহর করা হয়েছে। তাকে জীবিত ফেরত চাইলে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। টাকা না দিলে মাসুদকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেন তারা।
পরে মাসুদের বাবা ধার-দেনা করে অপহরণকারীদের ১০ লাখ টাকা পাঠান। ২০ মে তারা আবার ফোন করে আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন এবং মাসুদকে মারধরের ভিডিও দেখান। এসময় মাসুদকে কান্নাাকটি করতে দেখা যায়। এ ঘটনায় মাসুদের মা পাবনা সদর থানায় মামলা করেন। পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতার হাবিবুর রহমান ও অপহরণকারী প্রবাসী আব্দুর রহমান একসঙ্গে গাজীপুরে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। পরে আব্দুর রহমান চাকরি ছেড়ে লিবিয়ায় চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনিসহ তার ভাই বাংলাদেশি প্রবাসীদের অপহরণ করে একই কায়দায় মুক্তিপণের টাকা হাতিয়ে নেওয়া শুরু করেন। অপহৃতদের পরিবারের পাঠানা টাকা দেশে থাকা সুমন ও রবির মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতেন অপহরণকারীরা।
লিবিয়ায় থাকা অপহরণকারীদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া গেছে জানিয়ে পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী বলেন, তদন্তের স্বার্থে তাদের পুরো পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। অপহৃতকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
Advertisement
আমিনুল ইসলাম জুয়েল/এসআর/এএসএম