দেশজুড়ে

পিরোজপুরে চাহিদার চেয়ে বেশি কোরবানির পশু

ঈদুল আজহায় এবার পিরোজপুরে চাহিদার চেয়ে ৬ হাজার ২৩৭টি বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশই দেশি জাতের। কিছুদিন পরে পুরোদমে শুরু হবে কোরবানির পশু কেনাবেচা। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে গরুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তবে বর্তমানে পশুর খাবারের দামের ঊর্ধ্বগতিতে খরচ বেড়েছে বলে জানান খামারিরা।

Advertisement

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত মিলিয়ে ছোট-বড় পাঁচ হাজারের অধিক পশুর খামার রয়েছে। এসব খামার থেকে এ বছর ৪৬ হাজার ৪৮৭টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে। এরমধ্যে গরু ২৬ হাজার ৮৫৭টি, ছাগল ১৭ হাজার ৪৭২টি, মহিষ ২৭৬টি এবং ভেড়া ১৮৮২টি। চলতি বছর এ জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪০ হাজার ২৫০টি। বাড়তি পশু রয়েছে প্রায় ছয় হাজার ২৩৭টি। যা এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো সম্ভব হবে।

স্থানীয় খামারিরা বলছেন, এবার পর্যাপ্ত দেশি জাতের গরু পালন করছেন। গরুকে খাবার হিসেবে কাঁচা ঘাস, খৈল, ভুট্টা এবং ধানের কুড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। তবে পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ অনেক বেড়েছে। খামারিরা আরও বলেন, এবার যে পরিমাণ দেশি গরু প্রস্তুত রয়েছে, তাতে দেশি গরু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। খামারিরাও লাভবান হবেন। তাই ঈদের আগে দেশের বাজারে ভারতীয় গরু প্রবেশে কঠোর নজরদারির দাবি করেছেন তারা।

জেলার মালিখালী এলাকার একটি ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারের লোকজন। খামারের মালিক কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের খামারে ক্রস ব্রাহামা, ফ্রিজিয়ান, নেপালি, হরিয়ানা ও দেশিসহ উন্নত জাতের প্রায় ৫০টি গরু রয়েছে। এরমধ্যে কোরবানির জন্য ২০টি গরু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন ভুট্টা, খইল, কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি ও খড় দিচ্ছি এদের। পশুগুলোকে নিয়মিত পরিচর্যা করা হচ্ছে।

Advertisement

জেলার নেছারাবাদ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়্যারম্যান আব্দুল হক এর খামার জেলার সব চেয়ে বড় খামার তার খামারে ১০০টি বেশি গরু আছে। এবারের ঈদের জন্য এগুলো প্রস্তুত করেছেন। এবার প্রায় ৯০টি গরু বিক্রি করা হবে।

উত্তম কুমার হালদার বলেন, ১৫টি গরু কোরবানির জন্য বিক্রির পরিকল্পনা আছে। সবগুলোই দেশি। কী খাবার খাওয়াচ্ছেন জানতে চাইলে বলেন, প্রতিদিন চারবার পশুগুলোকে গমের ভুসি, ভুট্টা দানা, চিটা গুড়, খড় খাওয়ানো হয়। নিয়মিত পশু ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করা হয়।

এদিকে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে হৃষ্টপুষ্টকরণ, প্রাকৃতিক উপায়ে পশু পালন এবং বাজারজাতকরণে খামারিদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পিরোজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া।

তিনি বলেন, গরুকে দানাদার খাদ্য ও কাঁচা ঘাস খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি ভিটামিনও খাওয়াতে বলছি খামারিদের। তবে গরুকে নিষিদ্ধ কোনো রাসায়নিক ও হরমোনের ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। প্রাকৃতিক উপায়ে গরুকে ভালো খাদ্য কীভাবে খাওয়াবে এবং কীভাবে মানসম্মত মাংস উৎপাদন করবে, সে বিষয়ে খামারিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। চলতি বছর এ জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪০ হাজার ২৫০টি। বাড়তি পশু রয়েছে প্রায় ছয় হাজার ২৩৭টি। যা এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো সম্ভব হবে।

Advertisement

আরএইচ/এমএস