বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ভারতের চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে নামতেই সদ্য লোকসভা নির্বাচনে জয়ী অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতকে চড় মারেন এক নারী ‘সিআইএফ’ জওয়ান। এ নারীর নাম কুলবিন্দর কৌর। এটি নিয়ে রীতিমতো সরগরম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
Advertisement
তবে চণ্ডীগড়ের সেই চড় কাণ্ড দিল্লিতে পা রাখার পরও পিছু ছাড়ল না কঙ্গনার! বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বিমানবন্দরে নামতেই মাণ্ডির নবনির্বাচিত এ সংসদ সদস্যকে প্রায় ঘিরে ধরলেন সবাই।
আরও পড়ুন:
‘সিআইএসএফ’ জওয়ানের বিরুদ্ধে কঙ্গনাকে চড় মারার অভিযোগ নির্বাচনে জয়ের পর কঙ্গনা কি বলিউড ছেড়ে দিচ্ছেন?দিল্লি বিমানবন্দর থেকেও ভাইরাল হয়েছে কঙ্গনা রানাউতের একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীকে টপকেই একের পর এক প্রশ্নবাণের মুখোমুখি হতে হচ্ছে অভিনেত্রীকে।
Advertisement
উপস্থিত ফটো সাংবাদিকদের একটাই প্রশ্ন- ‘ম্যাম, চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কী ঘটেছে?’ চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে যা ঘটেছে, সেটা নিয়ে যদিও অবগত পুরো ভারত। এমনকী কঙ্গনা রানাউত নিজে পর্যন্ত এক ভিডিও বার্তায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন পাঞ্জাবে বাড়তে থাকা সন্ত্রাস নিয়ে। কী করে এদের সামলাব আমরা?’ তবুও দিল্লি বিমানবন্দরে বারবার এমন তীর্যক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মাণ্ডির নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যকে। সাংবাদিকদের এড়িয়ে গিয়ে সোজা গাড়িতে উঠে পড়লেন কোনোরকম কথাই বলেননি তিনি।
কঙ্গনাকে চড় মারা ওই কর্তব্যরত জওয়ান আদতে পাঞ্জাবের কাপুরথালার বাসিন্দা। কৃষক আন্দোলনকে ‘খলিস্তানি’ বলে আক্রমণ করার জেরেই কঙ্গনা রানাউতকে তিনি চড় মেরেছেন বলে জানিয়েছেন। ঘটনার পরই কুলদীপকে বরখাস্ত করা হয়েছে তার চাকরি থেকে।
নারী কমিশনের প্রধান রেখা শর্মার হস্তক্ষেপে এ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যার কারণে রেখাকেও অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে বর্তমানে।
কুলবিন্দর কৌর কেনো এমন কাণ্ড ঘটালেন? প্রশ্নের মুখে পড়তেই তার অকপট জবাব, ‘কঙ্গনা বলেছিলেন ১০০ টাকার জন্য কৃষকরা ওখানে বসে আছে। উনি কি গিয়ে বসেছিলেন সেখানে? কঙ্গনা যখন এহেন কটুক্তি করছিলেন কৃষক আন্দোলন নিয়ে, তখন আমার মা শামিল ছিলেন ওই প্রতিবাদে।”
Advertisement
বোনের সমর্থনে মুখ খুলেছেন তার ভাই শের সিং মহিবালও। তার ভাষ্য, ‘কঙ্গনার পার্স চেকিংয়ের সময়ই ঘটনাটা ঘটেছে বলে জানতে পারলাম। উনি বলেছিলেন, পাঞ্জাবের আন্দোলনরত নারীরা ১০০ টাকায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বাকবিতণ্ডার মাঝে মাথা ঠান্ডা না রাখতে পেরেই হয়তো আমার বোন চড় দিয়েছে।’
একুশ সালে মাসখানেক ধরে জারি থাকা দিল্লির রাজপথে পাঞ্জাবের কৃষক আন্দোলনের বিরোধিতা করে পর পর আক্রমণাত্মক টুইট করেছিলেন কঙ্গনা রানাউত। আন্দোলনরত কৃষকদের কখনো ‘খলিস্তানি’, কখনও ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলেও তোপ দেগেছিলেন। এমনকী, বিতর্কিত তিন কৃষি বিল প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা যখন ঘোষণা করলেন নরেন্দ্র মোদী, তখনো কৃষকদের ‘জিহাদি’ বলে আক্রমণ করেন বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা।
এ কারণে শিখ সম্প্রদায়ের একাংশ কঙ্গনার বিরুদ্ধে ভীষণ ক্ষেপেছিলেন। এ কারণে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। শুধু তাই নয়, পাঞ্জাবে গিয়ে কৃষকদের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল কঙ্গনাকে।
কৃষকরা কঙ্গনার গাড়ি ঘেরাও করে সেইসময়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেন। সেই রাগের বশেই কঙ্গনাকে কষে চড় মারেন চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কর্তব্যরত নারী ‘সিআইএফ’ জওয়ান।
এমএমএফ/এএসএম