আন্তর্জাতিক

জেলে থেকেও বিপুল ভোটে জয়ী সেই ‘খালিস্তানি’ নেতা

একদিনও প্রচারের জন্য বের হননি বা হতে পারেননি। জেলে বসেই লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হলেন খালিস্তানপন্থি নেতা অমৃতপাল সিং। লক্ষাধিক ভোটে তিনি জিতেছেন পাঞ্জাবের খাদুর সাহিব আসন থেকে।

Advertisement

এখন প্রশ্ন ‍উঠেছে, নির্বাচনে জিতলেও তিনি কি আদৌ শপথ নিতে পারবেন? জেলে বসে কি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা সম্ভব?

মঙ্গলবার (৪ জুন) নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অমৃতপাল পেয়েছেন ৪ লাখ ৪ হাজার ৩০ ভোট। ওই আসনে দ্বিতীয় হয়েছেন কংগ্রেসের কুলবীর সিংহ। তিনি পেয়েছেন ২ লাখ ৭ হাজার ৩১০ ভোট। তৃতীয় হয়েছেন কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টির (এএপি) লালজিৎ সিংহ ভুল্লার। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৩৬ ভোট।

কে এই অমৃতপাল?

Advertisement

‘ওয়ারিশ পাঞ্জাব দে’ সংগঠনের নেতা তিনি। ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ সঙ্গীদের নিয়ে অমৃতসারের কাছে অঞ্জলা থানার লকআপে হামলা চালিয়েছিলেন অমৃতপাল সিং। তারপর থেকে বেশকিছু দিন লাপাত্তা।

তার খোঁজে একের পর এক জায়গায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। শেষমেশ গত বছরের ২৩ এপ্রিল পাঞ্জাবের মোগা থেকে গ্রেফতার করা হয় অমৃতপালকে। জাতীয় সুরক্ষা আইনে (এনএসএ) গ্রেফতার করা হয় তাকে। পরে অমৃতপালকে নিয়ে যাওয়া হয় আসামে। বর্তমানে সেখানকার ডিব্রুগড় জেলে রয়েছেন তিনি।

লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থিতা

জেলে থাকাকালীন লোকসভা নির্বাচনে লড়ার আবেদন জানিয়েছিলেন খালিস্তানপন্থি এই নেতা। আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। খাদুর সাহিব আসন থেকে নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে লড়তে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের কাছে।

Advertisement

অমৃতপালের হয়ে মূলত প্রচার চালিয়েছিলেন তার বাবা তারসেম সিংহ। পাশে ছিলেন তার স্থানীয় সমর্থকরা। খাদুর সাহিব আসন ছেয়ে গিয়েছিল অমৃতপালের পোস্টারে, যেখানে তাকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে তলোয়ার হাতে দেখা গিয়েছিল।

অমৃতপালের বাবার দাবি, পাঞ্জাবের খাদুর সাহিবের মানুষ তার ছেলের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। এমনকি, গোটা পাঞ্জাবের মানুষও তার ছেলের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

প্রচারে মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছিলেন অমৃতপালের বাবা তারসেম। পাঞ্জাবে মাদকচক্র, জেল থেকে সব খালিস্তানপন্থি নেতার মুক্তি ও দেশে শিখ সত্তাকে রক্ষা— এই তিনটি বিষয় নিয়েই প্রচার চালিয়েছিলেন অমৃতপালের সমর্থকরা।

এই তিন মন্ত্রেই বাজিমাত করেছেন অমৃতপাল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, তিনি কি সংসদে শপথগ্রহণ করতে পারবেন? যদিও শপথগ্রহণ করা তার সাংবিধানিক অধিকার, কিন্তু যেহেতু তিনি কারাবন্দি, তাই বাধাও রয়েছে।

শপথ নেওয়ার উপায়

শপথগ্রহণের জন্য অমৃতপালকে আগে জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে হবে। কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে সংসদে গিয়ে শপথ নিতে পারবেন তিনি। তবে তার পর আবার জেলে ফিরতে হবে খলিস্তানপন্থি নেতাকে।

শপথ নেওয়ার পর অমৃতপালকে লোকসভার স্পিকারকে লিখিতভাবে জানাতে হবে যে, তিনি সংসদে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। অনুপস্থিত হিসেবে তিনি সংসদ সদস্য থাকতে পারেন কি না, ভোটাভুটির মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

তবে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও অমৃতপাল যদি দোষী সাব্যস্ত হন ও তাকে দুই বছর বা তার বেশি সময় জেলে থাকতে হয়, তাহলে সংসদ সদস্য পদ হারাবেন তিনি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, আনন্দবাজার

এসএএইচ