সরকার ইমামদের সম্মানজনক জীবিকার সংস্থান করতে চায়, তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে চায় বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
Advertisement
বুধবার (৫ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে জাতীয় ইমাম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইমামরা হলেন সমাজের চেঞ্জ এজেন্ট। মানুষকে সঠিক পথের নির্দেশনা দেওয়া এবং খারাপ পথ থেকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ইমামরা অনুঘটক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ধর্মমন্ত্রী আরও বলেন, একজন ইমাম যদি প্রকৃত অর্থেই ইমাম হয়ে উঠতে পারেন তাহলে তিনি সমাজকে বদলে ফেলতে পারেন। সমাজের সব অসঙ্গতি, অনাচার, পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মানুষকে সত্য-সুন্দরের পথে ফিরিয়ে আনতে পারেন। একটি সমাজ আদর্শ সমাজ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। দেশ ও জাতির সামগ্রিক কল্যাণে বিশেষ অবদান রাখতে পারেন। একটি সমাজের সব ইতিবাচক পরিবর্তনে ইমামরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন।
Advertisement
ইমামদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ইমামতি খুবই সম্মানজনক ও মহান একটি দায়িত্ব। রসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও ইমামতি করেছেন। তারপর তার সাহাবি ও খোলাফায়ে রাশেদিনরাও এই মহান দায়িত্ব পালন করেছেন। ইসলামি সমাজে ইমামদের অত্যন্ত সম্মান করা হয়। দ্বীনি বিষয়াদি ছাড়াও সাধারণ মানুষ তাদের দৈনন্দিন নানা বিষয় নিয়ে ইমামদের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার ক্ষেত্রে ইমামদের চেয়ে বেশি সুযোগ অন্য কোনো শ্রেণির মানুষের নেই।
ইমাম-মুয়াজ্জিনদের কল্যাণে সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইমাম ও আলেম-ওলামা সমাজকে সম্মানজনক জায়গায় অধিষ্ঠিত করতে চান। সমাজের সব শ্রেণির মানুষ যেন তাদের সম্মান করে, শ্রদ্ধার চোখে দেখে সেই জায়গায় ইমামদের সরকার আসীন করতে চায়। ইমামদের সম্মানজনক জীবিকার সংস্থান করতে চাই। তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে চাই।
‘একারণেই মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে ২০০১ সালে ইমাম ও মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেন তিনি। এই ট্রাস্ট থেকে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সুদবিহীন ঋণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।’
মো. ফরিদুল হক খান বলেন, একজন ইমাম যেমনিভাবে নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাত সম্পর্কে আলোচনা করবেন, তেমনিভাবে সুদ, ঘুস, দুর্নীতি, মাদকাসক্তি, নারী নির্যাতন, যৌতুক, বাল্যবিয়ে, চাঁদাবাজি, মজুতদারি, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রভৃতি সামাজিক ব্যাধি সম্পর্কেও মুসল্লিদের সচেতন করে তুলবেন।
Advertisement
ধর্মমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মসজিদ রয়েছে। প্রতি শুক্রবার তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি মানুষ মসজিদে সমবেত হয়ে থাকেন। এই মানুষগুলোকে যদি আমরা সঠিক পথে আনতে পারি তাহলে দেশটাকে বদলে দেওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পরে মন্ত্রী জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ইমাম ও শ্রেষ্ঠ খামার প্রতিষ্ঠাকারী মোট ২৬৫ জন ইমামের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মহা. বশিরুল আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অব গভর্নেসের সদস্য শায়েখ আল্লামা খন্দকার গোলাম মাওলা নকশাবন্দী ও সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রশিদ।
আরএমএম/জেডএইচ/জিকেএস