আইন-আদালত

এমপি আনার হত্যা: সিলিস্তি, তানভীরের পর শিমুলের দায় স্বীকার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় গ্রেফতার সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ নিয়ে তিন আসামি এই ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য দুজন হলেন-সিলিস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া।

Advertisement

বুধবার (৫ জুন) রিমান্ড তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তিনি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

মঙ্গলবার (৪ জুন) রিমান্ড চলাকালীন ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়াকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তিনি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

Advertisement

এর আগে সোমবার (৩ জুন) রিমান্ড চলাকালীন সিলিস্তি রহমানকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তিনি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

আরও পড়ুন

খুলনার চরমপন্থি নেতা শিমুল যেভাবে হয়ে ওঠেন আমানুল্লাহ এমপি আনোয়ারুল খুনের রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন ডিবিপ্রধান

এ মামলায় ৩১ মে কয়েকজন আসামির প্রথম দফা রিমান্ড শেষ হয়। তারা হলেন-সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও সিলিস্তি রহমান। তাদের আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আরও আটদিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালত প্রত্যেকের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Advertisement

এর আগে ২৪ মে দুপুর সোয়া ২টার দিকে তিন আসামিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এসময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি প্রত্যেকের আটদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগের দিন ২৩ মে সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও সিলিস্তি রহমানকে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন আনোয়ারুল আজীম।

বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলে না তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।

এ ঘটনায় ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

আরও পড়ুন

এমপি আনোয়ারুলের সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ছিল শিমুলের এমপি আনার হত্যা: দায় স্বীকার করে সিলিস্তির জবানবন্দি এমপি আনারকে কলকাতায় রিসিভের দায়িত্বে ছিলেন সিলিস্তি

মামলার এজাহারে এমপির মেয়ে উল্লেখ করেন, ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইলফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাই। ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো’।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আমরা বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজখবর করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে বাবার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস কলকাতার বরাহনগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। বাবাকে খোঁজাখুঁজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবাকে অপহরণ করে। বাবাকে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি।

‘এছাড়াও আরও কয়েকটি মেসেজ আসে। মেসেজগুলো বাবার মোবাইলফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে’- এজাহারে উল্লেখ করেন ডরিন।

জেএ/এমআইএইচএস/জিকেএস