বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হলো রেমা-কালেঙ্গা। এটি শুকনো ও চিরহরিৎ বন। সুন্দরবনের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বনভূমি এটি। রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
Advertisement
পরবর্তী সময়ে ১৯৯৬ সালে এটি আরও সম্প্রসারণ করা হয়। এই অভয়ারণ্যের আয়তন ১৭৯৫.৫৪ হেক্টর। পুরো এলাকা রেমা, কালেঙ্গা, ছনবাড়ি ও রশিদপুরে চারটি বিটে ভাগ করা। এই বনের দেখভালের জন্য আছে ১১টি ইউনিট ও ৭টি ক্যাম্প।
বাংলাদেশের যে কয়েকটি প্রাকৃতিক বনভূমি ভালো অবস্থায় টিকে আছে, রেমা-কালেঙ্গা তার মধ্যে অন্যতম। তবে নির্বিচারে গাছ উজাড়ের কারণে এ বনভূমির অস্তিত্বও হুমকির মুখে।
রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত। এটি ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত সংলগ্ন। রাজধানী ঢাকা থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব প্রায় ১৩০ কিলোমিটার।
Advertisement
বন বিভাগের কালেঙ্গা রেঞ্জের চারটি বিটের মধ্যে রেমা, কালেঙ্গা ও ছনবাড়ী বিস্তীর্ণ জঙ্গল নিয়ে রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য গঠিত।
রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য বিরল প্রজাতির জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ। ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৬৭ প্রজাতির পাখি, সাত প্রজাতির উভচর, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা-লতাগুল্ম পাওয়া যায় এই বনে।
বিভিন্ন বিরল প্রজাতির পাখির জন্য এই বন সুপরিচিত ও এদের মধ্যে আছে- ভীমরাজ, টিয়া, পাতি ময়না, লালমাথা কুচকুচি, সিপাহি বুলবুল, রাজ ধনেশ, শকুন, কালো মথুরা, লাল বনমোরগ।
আরও পড়ুনভারতের ঝাড়খন্ড ভ্রমণে কোন কোন স্পট ঘুরে দেখবেনহামহাম জলপ্রপাতে পৌঁছাবেন কীভাবে, কত খরচ?আরও আছে প্যাঁচা, পাতি ময়না, লালমাথা কুচকুচি, সিপাহি বুলবুল, রাজ ধনেশ, শকুন, কালো মথুরা, লাল বনমোরগ, প্যাঁচা, মাছরাঙ্গা, ঈগল, চিল ইত্যাদি।
Advertisement
এই বনে তিন প্রজাতির বানরের বাস, এগুলো হলো- উল্টোলেজি বানর, লাল বান্দর ও নিশাচর লজ্জাবতী বানর। তাছাড়া এখানে পাঁচ প্রজাতির কাঠবিড়ালীও দেখা যায়। এর মধ্যে বিরল প্রজাতির মালয়ান বড় কাঠবিড়ালি একমাত্র এ বনেই পাওয়া যায়।
বন্যপ্রাণীর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য আরও আছে মুখপোড়া হনুমান, চশমাপরা হনুমান, উল্লুক, মায়া হরিণ, মেছোবাঘ, দেশি বন শুকর, গন্ধগোকুল, বেজি, সজারু ইত্যাদি। শঙ্খচূড়, দুধরাজ, দাঁড়াশ, লাউডগা প্রভৃতিসহ এ বনে আঠারো প্রজাতির সাপের দেখা পাওয়া যায়।
রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্যে দুইভাবে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে সিলেটগামী বিভিন্ন পরিবহনে বাস কিংবা ট্রেনে চড়ে নামতে হবে শায়েস্তাগঞ্জ। সেখান থেকে অটোরিকশায় চড়ে যেতে হবে কালেঙ্গা।
বাসে শায়েস্তাগঞ্জের ভাড়া ৬০০-৭০০ টাকার মতো। ট্রেনে ভাড়া ৩০০-৭০০ টাকার মতো। শায়েস্তাগঞ্জ থেকে কালেঙ্গার অটোরিকশা ভাড়া ৬০০-৭০০ টাকা।
জেএমএস/জেআইএম