খতনা করাতে গিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র আহনাফ তাহমিদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করে আগামী তিন মাসের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (৩ জুন) হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মেহেদী।
Advertisement
আরও পড়ুনসুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু, জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা দুই চিকিৎসক গ্রেফতার, বন্ধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার
একই সঙ্গে এ ঘটনায় রুল জারি করেছেন আদালত। রুলে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ জে এস হাসপাতাল কেন বন্ধ করা হবে না, অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগকারী ও খতনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, আহনাফ তাহমিদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (৩ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এসব আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মেহেদী। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. একরামুল হক। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
Advertisement
আইনজীবীরা জানান, এর আগে খতনা করাতে গিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র আহনাফ তাহমিদের মৃত্যুর ঘটনার কারণ খুঁজে জড়িত ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তার বাবা ফখরুল ইসলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) আবেদন করেছিলেন। তাতে কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত ৩০ মে হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটে অন্যান্য আর্জির সঙ্গে দশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারির পাশাপাশি তিন মাসের মধ্যে বোর্ড গঠন করে শিশুর মৃত্যুর কারণ এবং হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলেছেন আদালত।
আইনজীবী বলেন, এই রিট পিটিশনটি ব্যতিক্রমধর্মী। কেবল অবহেলাজনিত কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়নি। হাসপাতাল এবং ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসা, হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, অতিরিক্ত চেতনানাশক প্রয়োগ, হাসপাতালে অক্সিজেন এবং আইসিইউ না থাকা এ কেবল অবহেলার মধ্যে পড়ে না। দণ্ডবিধির ২৯৯ ধারা মতে এর শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এর আগে ঘটনার রাতেই (২০ ফেব্রুয়ার) হাতিরঝিল থানায় শিশুটির বাবা মামলা করেন। চিকিৎসকের অবহেলায় তার সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ করেন তিনি। হাতিরঝিল থানায় করা এ মামলায় হাসপাতালটির মালিক মোক্তাদির, অবেদনবিদ মাহবুব ও অস্ত্রোপচারবিশেষজ্ঞ ইশতিয়াক আজাদকে আসামি করা হয়েছে। মোক্তাদির ও মাহবুবকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা এখন জামিনে। আর ঘটনার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ইশতিয়াক পালিয়েছেন।
এফএইচ/এমএইচআর/জেআইএম