কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা আবাসনে খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহের অংশ খুঁজতে ভারতীয় নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। সোমবার (৩ জুন) এই তথ্য জানায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি।
Advertisement
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে উন্নত প্রযুক্তি রয়েছে। তাই তাদের ডুবুরি দিয়ে তল্লাশি চালালে এমপি আনারের দেহাংশ উদ্ধার করা যেতে পারে। এরই মধ্যে উপকূলরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজীম।
আরও পড়ুন:
Advertisement
প্রায় ১০ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত বুধবার ২২ মে আনারের মৃত্যুর বিষয়টি সামনে আসে। হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা কসাই জিহাদ হাওলাদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, এমপির লাশের টুকরো ফেলা হয়েছে কলকাতার ভাঙড় এলাকার কৃষ্ণমাটি ও জিরানগাছার বাগজোলা খালে।
জিহাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর বাগজোলা খালের পানিতে নামেন কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। ব্যাপত তল্লাশির পরও তারা এমপির দেহাংশ খুঁজে পাওয়া পাননি। এমনকি, নিজেদের কাছে থাকা উন্নতি প্রযুক্তি ব্যবহার করেও মরদেহের টুকরো উদ্ধার করতে পারেনি সিআইডি।
এদিকে, আনার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও ভারতের তদন্ত দলকে সহায়তার জন্য ২৬ মে কলকাতায় যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রতিনিধি দল। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন ডিএমপির গোয়েন্দাপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। সেখানে অবস্থান করার সময় তিনি কলকাতা সিআইডিকে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়া বাড়ির সুয়ারেজ লাইন, কমোড ও সেপটিক ট্যাংক ভেঙে দেহাংশের সন্ধান করতে অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন:
Advertisement
হারুন অর রশীদের অনুরোধে ২৮ মে বিকেলে কলকাতা পুলিশ ভবনটির স্যুয়ারেজ লাইন ও সেপটিক ট্যাংকে দেহাংশের খোঁজে অভিযান চালায়। সেদিনই সঞ্জীবা গার্ডেনসের যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়, সেটির সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের বেশকিছু খণ্ডাংশ উদ্ধার করে
তবে সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া দেহের টুকরোগুলো এমপি আনারের কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। নিশ্চিত হওয়ার জন্য খণ্ডাংশগুলো ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে দেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার হলেও এখনো মাথার অংশ এবং দেহের হাড় উদ্ধার করতে পারেনি সিআইডি।
যদি ফরেন্সিক টেস্টে প্রমাণ হয় যে উদ্ধার করা খণ্ডাংশগুলো মানুষের, তাহলে সেগুলো এমপি আনারের কি না তা জানার জন্য তার মেয়ে কিংবা ভাইকে ডিএনএ টেস্টের জন্য কলকাতায় ডাকা হতে পারে।
ডিডি/এসএএইচ