ইতিহাসে প্রথম বারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে মেক্সিকো। বুথ ফেরত জরিপ বলছে, ৬১ বছর বয়সী ক্লাউডিয়া শেইনবাম দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। মেক্সিকো সিটির সাবেক এই মেয়র রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৫৬ শতাংশ ভোটে জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভোটের প্রাথমিক ফলাফলও বলছে যে, তিনি তার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী জোছিটল গালভেজকে পরাজিত করে দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে এগিয়ে আছেন।
Advertisement
যদি বুথফেরত জরিপ নিশ্চিত হলে শেইনবাম প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের যোগ্য উত্তরসূরী হবেন। শেনবাউম দেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, লোপেজ ওব্রাদরের অগ্রগতি ওপর ভিত্তি করে দেশ পরিচালনায় কাজ করে যাবেন তিনি।
ইতোমধ্যেই তাদের মোরেনা পার্টি নিজেদের বিজয়ী হিসেবে দাবি করেছে। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী গালভেজ তার সমর্থকদের আনুষ্ঠানিক ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে বলেছেন। সোমবার ভোটের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
মোরেনা পার্টির প্রেসিডেন্ট মারিও ডেলগাডো এই নির্বাচনকে দেশের ইতিহাসের একটি দুর্দান্ত মুহূর্ত বলে অভিহিত করেছেন। দলের সমর্থকরা ইতোমধ্যেই মেক্সিকো সিটির প্রধান চত্বর জোকালোতে পৌঁছাতে শুরু করেছে। ক্লাউডিয়া শেইনবাম, প্রেসিডেন্ট লেখা ব্যানার নিয়ে তারা জড়ো হচ্ছেন।
Advertisement
এই নির্বাচনে নারী প্রার্থীর প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ী হওয়ার বিষয়টিকে মেক্সিকোতে নারীদের ক্ষেত্রে পরিবর্তনের ঢেউ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ৮৭ বছর বয়সী এডেলমিরা মন্টিয়েল নামের এক নারী বলেন, তিনি বেঁচে থাকতেই দেশটির শীর্ষ পদে একজন নারীকে নির্বাচিত হতে দেখতে পারছেন এটা অনেক বড় পাওয়া।
রয়টার্স নিউজ এজেন্সিকে তিনি বলেন, আগে আমরা ভোটও দিতে পারিনি এবং যখন আমরা ভোটের অধিকার পেলাম তখন স্বামী যাকে ভোট দিতে বলেছিলেন তাকে ভোট দিতে হয়েছে। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এবং আমি সেটা বেঁচে থাকতেই দেখে যেতে পারছি। দেশটিতে ১৯৫৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে নারীদের ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
নানা রকম সহিংসতা এবং নির্বাচনে বেশ কয়েকজন প্রার্থী খুনের ঘটনার মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে দেশটির নির্বাচন। এর আগে মেক্সিকোর দক্ষিণ গুয়েরেরো রাজ্যে একটি নির্বাচনী প্রচারণায় এক মেয়র প্রার্থীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
আলফ্রেডো ক্যাব্রেরা নামের ওই মেয়রপ্রার্থী বুধবার কোইউকা দে বেনিতেজ শহরে খুন হন। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণা অনুষ্ঠানে এক ব্যক্তি তার কাছে গিয়ে বেশ কয়েকবার গুলি চালান। দেশটির সরকার বলছে, গত সেপ্টেম্বর থেকে কমপক্ষে ২২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। তারা নির্বাচনে স্থানীয় বিভিন্ন পদে অংশ নিয়েছিলেন।
Advertisement
দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর গত এপ্রিলের শুরুতে স্বীকার করেছিলেন যে, সেখানে মেয়র হিসেবে কে দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে বিভিন্ন মাদক চক্রগুলো হস্তক্ষেপ করতে চায়। তারা নিজস্ব প্রার্থীদের দিয়ে বা সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্মূল করে সফল হতে চাচ্ছে।
তিনি বলেন, তারা একটি চুক্তি করে এবং নির্ধারণ করে যে, কোন ব্যক্তি মেয়র হতে চলেছেন। তারা ওই চুক্তিতে এ বিষয়ে একমত হয় যে, তারা চায় না যে অন্য কেউ প্রার্থী হিসেবে অংশ নেবে এবং কেউ অংশ নিলে কি পদক্ষেপ নিতে হবে তারা সে বিষয়ে চুক্তি অনুযায়ীই কাজ করে।
টিটিএন