একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কুড়িগ্রামের ১১ জনের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে জেরা শেষ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ষষ্ঠ সাক্ষী হিসেবে এক নারীর জবানবন্দি গ্রহণ ও জেরা করা হয়। মামলার পরবর্তী (সপ্তম) সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আগামী ৫ আগস্ট দিন ঠিক করেছেন আদালত।
Advertisement
রোববার (২ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম ও বিচারক এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি ও প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুর শুকুর খান, অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি বলেন, এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা মো. শাহজাহান আলী ও মকবুল হোসেন মারা গেছেন। এখন মামলায় মোট আসামি আছেন ১১ জন। এদের মধ্যে ৬ জন কারাগারে, অন্য ৫ জন জামিনে।
Advertisement
আসামিরা হলেন- মো. নুরুল ইসলাম ওরফে নুর ইসলাম (৭১), এছাহাক আলী ওরফে এছাহাক কাজী (৭৩), মো. ইসমাইল হোসেন (৭০), মো. ওছমান আলী (৭০), মো. আব্দুর রহমান (৬৫), মো. আব্দুর রহিম ওরফে রহিম মৌলানা (৬৫), শেখ মফিজুল হক (৮১), মো. ছাইয়েদুর রহমান মিয়া ওরফে মো. সাইদুর রহমান (৬৪), আব্দুল কাদের (৬৭) ও আকবর আলী মুন্সী। অপরজনের নাম প্রকাশ করেননি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
এর আগে গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে মো. শাহজাহান আলী ও মকবুল হোসেন ওরফে দেওয়ানী মকবুল মারা যান।
২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে উলিপুর ও রাজারহাট উপজেলার ১৩ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
সংস্থার ৮০তম প্রতিবেদন জমার পর এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ মামলার ১৩ আসামির মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুজন পলাতক রয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের তিন ভলিউমে ৩৭৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে ওই প্রতিবেদন তুলে ধরেন তদন্ত সংস্থার প্রধান এম সানাউল হক। সেসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. রুহুল আমীনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ওইদিন সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৩ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে তদন্ত শুরু হয়ে একই বছরের ২৪ অক্টোবর শেষ হয়। আটক, নির্যাতন, অপহরণ, গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগের ১৬ অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ৭৪৫ জনকে হত্যার অভিযোগ।
এফএইচ/কেএসআর