বর্তমানে পেশাজীবীদের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হচ্ছে লিঙ্কডইন। পৃথিবীব্যাপী প্রায় ৪০০ মিলিয়ন লিঙ্কডইন ব্যবহারকারী রয়েছে। এক প্ল্যাটফর্মে এতো লোক আর কোথায় পাবেন? উন্নত দেশগুলোতে লিঙ্কডইনের মাধ্যমে অনেকেই পাচ্ছেন মনের মতো চাকরি। তাই নিজেকে তুলে ধরুন লিঙ্কডইনের মাধ্যমে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন নিয়াজ আহমেদকীভাবে তৈরি করবেন লিঙ্কডইনধরা যাক, আপনার সিভি লিখা শেষ। সিভিতে আপনার পার্সোনাল তথ্যগুলো যেভাবে বসিয়েছেন ঠিক একই ভাবে লিঙ্কডইনেও বসান। প্রফেশনাল ছবি দিন। চলুন, জেনে নেই এর ধারাবাহিকতা। সারাংশলিঙ্কডইন প্রথমেই আপনার সম্পর্কে জানতে চাইবে। নিজেকে কৃতকর্মের মাধ্যমে পরিচিত করান এবং কী কী কাজ জানেন বা কী করতে চান- তুলে ধরুন। মিশন ও ভিসন স্টেটমেন্ট লিখুন। লিঙ্কডইন আপনকে দিচ্ছে আপনার যেকোনো ভিডিও ব্লগ, ডকুমেন্ট, প্রেজেন্টেশন আপলোড করার সুযোগ। নিজের সিভিটি এখানে আপলোড করে রাখতে পারেন। অভিজ্ঞতা ঠিক যেমন তৈরি করেছেন সিভিতে। কপি পেস্ট করে বসিয়ে দিন। এক্ষেত্রেও লিঙ্কডইন আপনাকে ডকুমেন্ট, ইমেজ, ভিডিও যুক্ত করার সুযোগ দিয়েছে। কোনো কোম্পানির গোপনীয় তথ্য দেয়া যাবে না। কিন্তু ধরুন, আপনি একটি ট্রেনিং করেছেন বা করিয়েছেন, আপনি প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন, আপনার কোম্পানির কোনো প্রকাশিত লেখা, ভিডিও, কোনো ফিচার এখানে আপলোড করুন। সিভিতে এই সুযোগ নেই। একাধিক কোম্পানিতে চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলে প্রতি ক্ষেত্রে একই পন্থা অবলম্বন করুন। যারা ফ্রেশার তারা ইন্টার্নশিপ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিসিট, মেম্বারশিপের মাধ্যমে অভিজ্ঞতার ঘরটি পূরণ করুন। কো-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজের মাধ্যমে আপনি কোন কোন কাজে অভিজ্ঞ- তা ফুটিয়ে তুলুন। কোন কাজে সেচ্ছাসেবক হিসেবে ছিলেন বা কোন কোম্পানির প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন সেটাও বসানোর সুযোগ আছে লিঙ্কডইনে। এন্ডোর্সমেন্টব্যাপারটা অনেকটা ভোটের মত। আপনি এখানে আপনার ৫০টি স্কিলের নাম বলবেন। আপনার সবচেয়ে ভালো ১০টি স্কিল লিঙ্কডইন দেখাবে। আপনার সাথে যারা কানেক্টেড হবেন তারাই বলে দিবেন যে, আপনি আসলেই যে দক্ষতাটি উল্লেখ করেছেন আসলে আপনি ওই ব্যাপারে কতটা দক্ষ। অবশ্যই লিঙ্কডইনে এন্ডোর্সমেন্ট বাড়াবেন যাতে অন্যরা আপনার প্রোফাইল দেখে আপনার দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পায়। ধরুন, আমি ট্রেইনার। এখন আপনি যদি আমাকে এন্ডোর্স করেন ট্রেইনার হিসেবে, তাহলে অন্য কেউ যখন আমার প্রোফাইল দেখবেন, তখন উনি ধারণা পাবেন যে আমি ট্রেইনার। কারণ আপনি আমাকে ট্রেইনার হিসেবে সার্টিফাই বা এন্ডোর্স করেছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা সিভি থেকে এক এক করে সবগুলো বসিয়ে নিন। সার্টিফিকেট চাইলে স্ক্যান করে যুক্ত করে দিতে পারেন। প্রফেশনাল সার্টিফিকেট যুক্ত করা ভালো। প্রকাশনাকারো কোনো লেখা কোনো জার্নালে ছাপা হয়ে থাকলে লিঙ্কসহ সেটিও দিয়ে দিন। মজার বিষয় হচ্ছে, আপনি যখন প্রোফাইল সাজাবেন তখন লিঙ্কডইন নিজেই আপনাকে অনেক নির্দেশনা দিবে। ট্রেনিংসিভি থেকে এক এক করে ট্রেনিংগুলো তুলে নিন। কোনো কোর্স করা থাকলে সেটি যুক্ত করুন। টেস্ট স্কোরজিআরই, আইইএলটিএস, টোফেল পরীক্ষার স্কোর দিতে পারেন। যুক্ত করতে পারেন সার্টিফিকেটও।পুরস্কারআপনি হয়তো চাকরির পাশাপাশি কোনো কাজের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন। কোনো সমাজসেবামূলক কাজ, কোনো খেলাধুলা, স্কাউট, বিতর্ক ইত্যাদি- সেগুলো উল্লেখ করতে পারেন। চাকরিতে পাওয়া পুরস্কারের কথা অভিজ্ঞতা অংশে লেখাই ভালো। প্রজেক্টআপনি হয়তো কোনো প্রোডাক্ট লঞ্চ করেছেন, কোনো নতুন মেশিন বসিয়েছেন কোম্পানিতে, কোন ইভেন্ট অ্যারেঞ্জ করেছেন- এগুলোর প্রত্যেকটিই প্রজেক্ট। এগুলো সাবলীল ভাবে উল্লেখ করুন। মনে রাখবেন, নিত্যদিনের কাজগুলো কিন্তু প্রজেক্ট নয়। প্রজেক্টের শুরু আছে, শেষ আছে। প্রজেক্ট ইউনিক।সার্টিফিকেশন ধরুন, আপনি কোনো ক্লাবের মেম্বার, কোনো দলের সভাপতি। সেই সার্টিফিকেটগুলো এখানে তুলে ধরতে পারেন। প্যাটেন্টআপনার কোনো নতুন আইডিয়া যা কিনা আপনার নিজের বা কোম্পানির জন্য বিরাট সাফল্য বয়ে এনেছিলো, এখানে সেগুলো উল্লেখ করুন। আপনি হয়তো কোম্পানিতে কোনো একটা পলিসি তৈরি করে দিয়ে এসেছেন, যেটা আগে ছিলো না। লেখক : কর্পোরেট ট্রেইনার, প্রফেশনাল সিভি রাইটার ও সিইও, কর্পোরেট আস্ক। এসইউ/এবিএস
Advertisement