বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) নতুন করে সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমা বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। রোববার (২ জুন) এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ তুলে ধরেন সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক।
Advertisement
বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির ২০১৬ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার ৯৮ শতাংশই মিটারে চলে না। ৮৭ শতাংশ যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যায় না । এসব অটোরিকশার ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি যখন চরমে ঠিক তখনই রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার একটু স্বস্তির র্বাতা নিয়ে যাত্রীদের পাশে দাঁড়ায়। এরই মধ্যে ঢাকা মহানগরীর উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে মেট্রোরেল চালু হয়েছে। চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এসি বাস চালু হতে যাচ্ছে। এসব কারণে চাপে পড়ে অটোরিকশার এসব ভাড়া নৈরাজ্য এখন বন্ধ হওয়ার পথে।
তিনি বলেন, এখন কতিপয় অটোরিকশার মালিক সমিতির নেতারা বিআরটিএর সঙ্গে আঁতাত করে আবারও নতুন করে ভাড়া নৈরাজ্য উসকে দিতে যাত্রী ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমা বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিআরটিএর দায়িত্ব ছিল সিএনজিচালিত অটোরিকশার মিটারে চলাচল নিশ্চিত করা। প্রতি অটোরিকশা বিনা প্রশ্নে যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা। ছোট এ দুটি অঙ্গিকার প্রতিষ্টায় সম্পূণ ব্যর্থ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ।
তারা যাত্রীদের অভিযোগ নিষ্পত্তি ছাড়া পূর্বের ভাড়া বাড়ানোর সময়ে যাত্রীসেবা সংক্রান্ত অটোরিকশা মালিক সমিতি থেকে প্রদত্ত অঙ্গীকারনামা পূরণে ব্যর্থতার পরও অদৃশ্য কারণে সম্প্রতি বিআরটিএ সদর কার্যালয়ে ভাড়া বৃদ্ধির জন্য গোপনে বৈঠক করে। এ বৈঠকের পর থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলরত সিএনজি অটোরিকশার যাত্রী ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমা রাতারাতি বৃদ্ধির গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
Advertisement
তিনি মালিকদের সঙ্গে আঁতাত করে এমন ভাড়া বৃদ্ধির পাঁয়তারা জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করার দাবি জানান।
মোজাম্মেল হক বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা পরিচালনার জন্য ২০০৬ সালের একটি নীতিমালা রয়েছে। এ নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য একই হারে যাত্রী ভাড়া ও মালিকের জমা নির্ধারণ করা হয়। সরকার অটোরিকশার দৈনিক জমা যখন ৬০০ টাকা নির্ধারণ করেছিল তখন এ নীতিমালা লঙ্ঘন করে ঢাকা মহানগরীর অধিকাংশ মালিক ২ বেলায় ৬০০ টাকা করে দৈনিক ১২০০ টাকা জমা আদায় করেছে।
এরপর সরকার অটোরিকশার দৈনিক জমা ৯০০ টাকা নির্ধারণ করলে এখন কোনো কোনো মালিক ২ বেলায় ৮০০ টাকা হারে দৈনিক ১৬০০ টাকা আবার কেউ দৈনিক ১৮০০ টাকা আদায় করছে।
এ বিষয়ে একাধিক শ্রমিক সংগঠন সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্তসহ বিআরটিএর কাছে অভিযোগ জমা করলেও বিআরটিএ এমন দৈনিক জমা আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করতে পারেনি।
Advertisement
এমন পরিস্থিতিতে দৈনিক জমা ১১৫০ টাকা করা হলে যাত্রীরা আবারো অটোরিকশার ভাড়া নৈরাজ্যর শিকার হবে বলে মনে করে যাত্রী অধিকার সুরক্ষায় নিয়োজিত সংগঠনটি। অটোরিকশার মালিকদের এমন অতিরিক্ত দৈনিক জমার কারণে ৪ লাখ টাকা দামের এক একটি অটোরিকশার মেট্রো নিবন্ধন পেলে ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকায় বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
এমএমএ/এমআইএইচএস/জিকেএস