কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ধর্ষণসহ একাধিক মামলার আসামি মহিন উদ্দিন প্রকাশ গাউয়া (২৮) নামে এক যুবককে গণপিটুনিতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১ জুন) ভোরে উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের ধনড়া ঈদগাহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ত্রিনাথ সাহা সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তবে স্ত্রী আকলিমা আক্তার লিমার দাবি পূর্ব বিরোধের জের ধরে তাকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত মহিন উদ্দিন উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের খাটরা গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, মহিন উদ্দিন ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি ও ইভটিজিংসহ একাধিক মামলার আসামি। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান। শুক্রবার (৩১ মে) দিনগত রাতে গুণবতী ইউনিয়নের চাপাচৌঁ গ্রামে সরোয়ার আলম নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি করে অন্যত্র লুকিয়ে রাখেন। পুনরায় তিনি বাড়িতে গিয়ে তাদের একটি সিএনজি অটোরিকশা চুরির সময় বাড়ির লোকজন টের পেয়ে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন মহিন উদ্দিনকে ধাওয়া করে আটক করেন।
Advertisement
এক পর্যায়ে ধনড়া ঈদগাহ নামকস্থানে গণপিটুনিতে তিনি গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে মহিন উদ্দিনের ছোট বোন সালমা আক্তার ও তার স্বামী নাঈম তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী আকলিমা আক্তার লিমা জাগো নিউজকে বলেন, আমার স্বামী এক সময় খারাপ পথে ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার আরও একটি সন্তান দুনিয়াতে আসার সংবাদ পেয়ে তিনি সব অপকর্ম ছেড়ে ভালো হয়ে যান। তিনি চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন সড়কে সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
শুক্রবার সকালে আমাকে নিয়ে তিনি মোটরসাইকেল যোগে পরিকোট এলাকায় যায়। সেখানে তার পূর্ব পরিচিত বন্ধু রুবেল ও রাজিব মোটরসাইকেলটি আটকে চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে মীর আহম্মেদ তোয়ান নামে এক সন্ত্রাসীর হাতে তুলে দিবে বলে ভয়ভীতি দেখায়। পরে আমরা ১১ হাজার টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাজার করতে মহিন উদ্দিন খাটরা গ্রামে যান। শনিবার ভোরে আমার বোন সালমা আক্তার জানায়, তাকে পিটুনি দেওয়া হয়েছে। পরে দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি ধনড়া ঈদগাহ এলাকায় আমার স্বামী মাটিতে পড়ে আছেন। পরিকল্পিত ভাবে চুরির অপবাদ দিয়ে তার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি তদন্তপূর্বক এর বিচার দাবি করেছেন।
Advertisement
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. আসিফ ইকবাল বলেন, মহিন উদ্দিনকে তার স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। ধারণা করা হচ্ছে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে ওসি ত্রিনাথ সাহা জাগো নিউজকে বলেন, মহিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। শুক্রবার রাতে চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক করে গণপিটুনিতে তিনি আহত হন। পরে স্বজনরা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
জাহিদ পাটোয়ারী/এনআইবি/জেআইএম