ধর্ম

দুধ দুনিয়ায় সর্বোত্তম খাদ্য ও জান্নাতের নেয়ামত

দুধ আমাদের দৈহিক গঠন, বিকাশ ও মেধা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি দুনিয়ায় আল্লাহর দেওয়া সেরা খাবার ও পানীয়; খেতে যেমন সুস্বাদু, পুষ্টিগুণেও অনন্য। দুধে যেমন তৃষ্ণা মেটে, খাদ্য চাহিদাও পূর্ণ হয়। কোরআনে আল্লাহ তাআলা তার বিশেষ নেয়ামত হিসেবে গবাদিপশুর দুধের কথা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

Advertisement

وَ اِنَّ لَکُمۡ فِی الۡاَنۡعَامِ لَعِبۡرَۃً نُسۡقِیۡکُمۡ مِّمَّا فِیۡ بُطُوۡنِهٖ مِنۡۢ بَیۡنِ فَرۡثٍ وَّ دَمٍ لَّبَنًا خَالِصًا سَآئِغًا لِّلشّٰرِبِیۡنَতোমাদের জন্য গবাদি পশুতেও অবশ্যই শিক্ষা নিহিত আছে। তোমাদের পান করাই ওদের পেটের গোবর আর রক্তের মাঝ থেকে বিশুদ্ধ দুগ্ধ যা পানকারীদের জন্য খুবই উপাদেয়। (সুরা নাহল: ৬৬)

হাদিসে দুধকে সর্বোত্তম খাবার ও পানীয় বলা হয়েছে। আল্লাহর কাছে এই নেয়ামত বৃদ্ধির জন্য দোয়া করার নির্দেশ দিয়ে নবিজি বলেছেন, দুধ খাবার ও পানীয় হিসেবে যথেষ্ট হয়, অন্য কোনো খাবারই তা হয় না। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন তোমাদের কেউ খাবার খায়, তখন সে যেন এ দোয়াটি পড়ে,

اَللّٰهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيْهِ وَاَطْعِمْنَا خَيْرًا مِّنْهُ

Advertisement

উচ্চারণ: আল্লহুম্মা বারিক লানা ফীহি ওয়া আত্বইমনা খয়রাম মিনহু

অর্থ: হে আল্লাহ! তার মধ্যে আমাদের জন্য বরকত দান করুন এবং তা অপেক্ষা উত্তম খাবার দান করুন।

যখন দুধ পান করবে তখন যেন বলে,

اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَزِدْنَا مِنْهُ

Advertisement

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফীহি ওয়া যিদনা মিনহ

অর্থ: হে আল্লাহ! এর মধ্যে আমাদের জন্য বরকত দান করুন এবং তা আরও বেশি দান করুন।

কারণ দুধ ছাড়া অন্য কোনো কিছুই খাদ্য ও পানীয় উভয়ের জন্য যথেষ্ট হয় না। (সুনানে তিরমিজি: ৩৪৫৫, সুনানে আবু দাউদ: ৩৭৩০)

দুধ জান্নাতের নেয়ামত

শুধু দুনিয়াতেই নয়, জান্নাতের নেয়ামত হিসেবেও দুধ থাকবে। কোরআনে জান্নাতের নেয়ামত হিসেবেও আল্লাহ তাআলা দুধের ঝরনার কথা বলেছেন। আল্লাহ বলেন,

مَثَلُ الۡجَنَّۃِ الَّتِیۡ وُعِدَ الۡمُتَّقُوۡنَ فِیۡهَاۤ اَنۡهٰرٌ مِّنۡ مَّآءٍ غَیۡرِ اٰسِنٍ وَ اَنۡهٰرٌ مِّنۡ لَّبَنٍ لَّمۡ یَتَغَیَّرۡ طَعۡمُهٗ وَ اَنۡهٰرٌ مِّنۡ خَمۡرٍ لَّذَّۃٍ لِّلشّٰرِبِیۡنَ وَ اَنۡهٰرٌ مِّنۡ عَسَلٍ مُّصَفًّی وَ لَهُمۡ فِیۡهَا مِنۡ کُلِّ الثَّمَرٰتِ وَ مَغۡفِرَۃٌ مِّنۡ رَّبِّهِمۡমুত্তাকিদের যে জান্নাতের ওয়াদা দেওয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত হলো, তাতে রয়েছে নির্মল পানির নহরসমূহ, দুধের ঝরনাধারা যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পানকারীদের জন্য সুস্বাদু শুরার নহরসমূহ এবং আছে পরিশোধিত মধুর ঝরনাধারা। সেখানে তাদের জন্য থাকবে সব ধরনের ফলমূল আর তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা। (সুরা মুহাম্মাদ: ১৫)

দুনিয়াতে গরু, ছাগল, মহিষ ইত্যাদি পশুর ওলান থেকে দোহন করা দুধ আমরা পান করি, যা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। দোহন করার পর জ্বাল দিতে সামান্য দেরি হলেই অনেক সময় দুধ নষ্ট হয়ে যায়। জান্নাতের দুধ কোনো পশুর স্তন থেকে নির্গত হবে না বরং তা ঝরনাধারার মতো প্রবাহিত হবে। জান্নাতের দুধ কখনো নষ্টও হবে না।

ওএফএফ/এএসএম