মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ হচ্ছে দেশটির শ্রমবাজার। ১ জুন থেকে আর কোনো বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারবেন না।
Advertisement
এমন অবস্থায় শুক্রবার (৩১ মে) সকাল থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকরা। দিনভর কষ্ট করে রাতেও ফ্লাইটের আশায় বিমানবন্দরে মানবেতর অবস্থায় রয়েছেন কয়েকশ যাত্রী। কেউ কেউ টিকিট কেটে এসেছেন, কেউবা আবার টিকিট ছাড়াই সেখানে অপেক্ষা করছেন।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এমন চিত্র দেখা যায়।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মালয়েশিয়াগামী সাতটি ফ্লাইট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে গেছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আরও একটি বিশেষ ফ্লাইট যায়।
Advertisement
আরও পড়ুন
মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে হাজারো বাংলাদেশি কর্মীর অপেক্ষাবিমানবন্দরে যাত্রীরা বলছেন, কেউ কেউ দুদিন থেকে অপেক্ষা করছেন। কেউবা আবার আজ সকাল থেকে বিমানবন্দরে এসে বসে আছেন।
তাদের ভাষ্য, এজেন্সি থেকে তাদের এয়ারপোর্টে আসতে বলা হয়েছে। তাদের কেউ কেউ টিকিট কেটেছেন, আবার অনেকে টিকিট না থাকা সত্ত্বেও চলে এসেছেন।
তারা জানান, মালয়েশিয়া যাওয়ার নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও বিশেষ কোনো ফ্লাইটে যদি তাদের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়, সেই আশায় অপেক্ষা করছেন।
Advertisement
আরিফুল নামে এক যাত্রী বলেন, ‘টিকিট আছে, সকাল থেকে খাওয়া নেই, বিশ্রাম নেই। সর্বশেষ বিশেষ ফ্লাইটেও যেতে পারিনি। আমরা তো বুঝি না কয়টায় ফ্লাইট। আমাকে গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে তিনবার সময় দিয়েছে। একবার বলে ভোর ৫টায় ফ্লাইট, আবার বলে বিকেল ৪টায়, এভাবে বলে বলে অপেক্ষা করাচ্ছে। আমার সঙ্গে থেকে আমার পরিবারও কষ্ট পাচ্ছে।’
আরও পড়ুন
আপসহীন ইমিগ্রেশন: মালয়েশিয়ায় চলছে অবৈধ অভিবাসীদের দুঃসময়এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈকত হালদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘অসাধু এজেন্সিগুলো যাত্রীদের ভোগাচ্ছে। তারা টিকিট পায়নি, তবুও বিমানবন্দরে যাত্রীদের এনে হয়রানি করছে। আমরা খবর পেয়েছি, তারা ফ্লাইটের আশায় বসে আছেন। টিকিট কাটতে পারেনি শুধু শুধু যাত্রীদের দুঃস্বপ্ন দেখাচ্ছে। আমাদের নির্দেশনা ছিল নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কেউ যেন টিকিট না কাটে। অনেকে ৬০ হাজার টাকার টিকিট এক লাখ ২০ হাজার দিয়ে কেটেও যেতে পারছে না।’
জানা গেছে, যারা সরকারিভাবে মালয়েশিয়ার কর্মীভিসা পেয়েছেন তাদের এ বছরের ৩১ মের মধ্যে প্রবেশের বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে দেশটির সরকার। এ বিষয়ে গত ১৬ মে পত্রিকায় জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সবাইকে জানালেও বাংলাদেশে অবস্থানরত অনেক প্রবাসী কর্মী জানতেন না। পরে মে মাসের ২০ তারিখের পর বিষয়টি জানাজানি হলে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার তাড়াহুড়ো পড়ে যাওয়ায় ফ্লাইটের সংকট দেখা দেয়। ফলে অনেক প্রবাসীর মালয়েশিয়া যাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়।
আরএএস/ইএ