সিলেটের সীমান্তবর্তী কয়েকটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে কিছু এলাকা। সুরমা নদী উপচে পানি আসতে শুরু হওয়ায় সিলেট নগরীর কিছু এলাকা বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। শুক্রবার (৩১ মে) সকাল থেকে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে নগরীর বিভিন্ন নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে তালতলা, মেন্দিবাগ, মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে সড়কে পানি উঠতে শুরু করেছে।
Advertisement
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সিলেটের গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বিশ্বনাথ, বিয়ানীবাজারে ও গোলাপগঞ্জের একাধিক এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে বিয়ানীবাজার উপজেলার একাধিক স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাত থেকে একটু একটু করে পানি বাড়ছে। যা শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
রাতেই নগরীর তালতলায় অবস্থিত ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়ে পানি প্রবেশ করে। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেন।
Advertisement
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, সুরমা নদীতে পানি বেড়েছে। ফলে নগরের কাজিরবাজারসহ যেসব ড্রেন সুরমায় পড়েছে, সেসব ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশনের বদলে উল্টো পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এজন্য কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেওয়ায় জরুরি সভা করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরভবনের সভাকক্ষে এ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মহানগরের কয়েকটি ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং এসব ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসন জানায়, জেলার আট উপজেলার ৪৮টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বন্যাদুর্গতদের জন্য ৫৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে চার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, কিছু কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ইউনিয়নভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি পরিবারে শুকনা ও রান্না করা খাবার এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
আহমেদ জামিল/এসআর/এএসএম