নৌযান শ্রমিকদের ১১ দফার অনেক বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ফলপ্রসূ আলোচনা না হলে নৌ-শ্রমিকরা সংগ্রামে যেতে পারেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। নৌ-শ্রমিকদের ১১ দফার বিষয়ে উত্থাপিত বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন, নৌযান মালিক সমিতি এবং সরকারের মধ্যে আলোচনা শেষে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ সভা হয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সভায় দাবিগুলো বাস্তবায়ন অগ্রগতির বিষয়ে জানানো হয় যে, নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠনের কার্যক্রম চলমান; নাবিকদের নিয়োগপত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য নৌযান মালিকদের পত্র দেওয়া হয়েছে; সব মালিক সমিতিকে এক প্ল্যাটফর্মে এনে এককেন্দ্রিক সিরিয়াল মেইনটেইন করে চট্টগ্রাম বন্দরসহ সব বন্দরে পণ্য পরিবহনে সমতা বিধানের লক্ষ্যে মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা চলমান; মালিক সমিতিসমূহের সঙ্গে গেজেটবহির্ভূত দ্বিপাক্ষিক চুক্তিভূক্ত অমীমাংসিত দাবিসমূহ পুনর্নির্ধারণ করে চুক্তি সম্পাদন করা মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনের বিষয়ে মালিক সমিতি ব্যবস্থা নেবে।
Advertisement
এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরে নিরাপদে জাহাজ রাখার জন্য শঙ্খ নদীকে পোতাশ্রয়ের উপযোগী করা; অভ্যন্তরীণ নদীর নাব্যতা রক্ষা; নৌপথ, নদী ও সব নদীবন্দরে পর্যাপ্ত সংখ্যক মার্কা-বয়া-বাতি স্থাপন; চ্যানেলে জাল পাতা বন্ধ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পাইলট সরবরাহ বিআইডব্লিউটিএ নিশ্চিত করবে; চট্টগ্রামের চরপাড়া-জালিয়াপাড়া পর্যন্ত নাবিকদের নিরাপদে ওঠা-নামার জন্য কমপক্ষে ৫টি ইজারামুক্ত ঘাট ও মেরিন ড্রাইভওয়ের ওপর চরপাড়া ও জালিয়াপাড়া এলাকায় দুটি ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে; ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাসের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা চলছে; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে এ বিষয়টি আলোচনার লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে; নৌপরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক বিধি অনুযায়ী নৌযানে মাস্টার-ড্রাইভার নিয়োগ নিশ্চিত করা হচ্ছে; ইনল্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার প্রযোজ্য জাহাজগুলোতে ইনল্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে পত্র দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
নৌ-শ্রমিকদের ৮০ শতাংশ চর্ম ও পেটের পীড়ায় আক্রান্তসভায় আরও জানানো হয়, নৌযানের মাস্টার-ড্রাইভার পদের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পূর্বে ১ জুলাই থেকে চক্ষু পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে; বালুবাহী নৌযানে কর্মরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে পত্র দেওয়া হয়েছে; অভিযান-১০ লঞ্চের চারজন মাস্টার-ড্রাইভারের সনদ বাতিলের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে; নৌদুর্ঘটনার সব মামলা নৌআদালতের এখতিয়ারভুক্ত করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ এবং বাংলাদেশ নৌ-পুলিশকে পত্র দেওয়া হয়েছে; সামুদ্রিক মৎস্য শিকারি জাহাজ শ্রমিকদের গেজেটের বাস্তবায়নে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কাজ করছে এবং নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, কালোবাজারি, জাহাজ ছিনতাই বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে জানানো হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সভায় ভালো আলোচনা হয়েছে। অনেক বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। মালিক, শ্রমিক, সরকার একত্রে আলোচনা করলে অনেক কিছুই সমাধান হয়। এক বৈঠকে সমাধান না হলে আরও বৈঠকে সমাধান হয়। ফলপ্রসূ আলোচনা না হলে তখন শ্রমিকরা সংগ্রামে যেতে পারেন।
Advertisement
সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব শেখ সালেহ আহমেদ, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড শিপ সার্ভেয়ার মো. মনজুরুল কবীর, পররাষ্ট্র, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বদিউজ্জামান বাদল, বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির আব্দুস সালাম খান, বাংলাদেশ ওয়েল ট্যাঙ্কার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশের লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আফসার হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/ইএ