তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (৩০ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। অবশ্য এরপরও ডিএসইতে লেনদেন তিনশ কোটি টাকার ঘরেই রয়েছে।
Advertisement
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগের দাম কমেছে। ফলে কমেছে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদের পরিমাণ।
এর আগে বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে যায়। সেই সঙ্গে দেখা দেয় লেনদেন খরা। ডিএসইতে চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটে।
শেয়ারবাজারের এ মন্দা অবস্থা কাটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়ে সাংবাদ সম্মেলন করেন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। সাংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়-বিনিয়োগকারীরা প্রতিনিয়ত তাদের পুঁজি হারাচ্ছে এবং অনেক বিনিয়োগকারী এরই মধ্যে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছেন।
Advertisement
এ পরিস্থিতিতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় লেনদেনের ১৩ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে যায়। ফলে শেয়ারবাজারে আবারও পতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের।
তবে প্রথম আধা ঘণ্টার লেনদেন পার হওয়ার পর বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম কমার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। ফলে সূচকও ঋণাত্মক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকে দাম বাড়ার তালিকা। এতে সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৫১ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৪৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৭৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
Advertisement
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৬৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে রূপালী লাইফের শেয়ার। কোম্পানিটির ১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বিচ হ্যাচারি, রিলায়েন্স ওয়ান দ্যা ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড, ই-জেনারেশন, সোনালী পেপার এবং গোল্ডেন সন।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৪টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
এমএএস/এমআইএইচএস/জিকেএস