ক্যাম্পাস

কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভে ঢাবি কর্মচারীরা

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং আগের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কর্মচারীরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। বিক্ষোভ মিছিলটি ভিসি চত্বর, কলাভবন, টিএসসি, কেন্দ্রীয় মসজিদ, মধুর ক্যান্টিন, মলচত্বর হয়ে পুনরায় ভিসি চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

বিক্ষোভে কর্মচারীদের ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘৭৩ এর অধ্যাদেশে হস্তক্ষেপ, বন্ধ কর করতে হবে’, ‘২০১৫ এর পে স্কেল, চালু করো করতে হবে’, ‘এক দেশে দুই নীতি, মানি না মানবো না’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বিক্ষোভে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও কর্মচারী সমিতির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ সরোয়ার মোর্শেদ বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন সবশ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজপথে ঢাবি শিক্ষকরা

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- ‘সব স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী চলতি বছরের ১ জুলাই ও তার পরে নতুন যোগদান করবেন, তাদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইনের অন্তর্ভুক্ত করেছে সরকার। হঠাৎ করেই এমন একটি প্রজ্ঞাপন জারির ফলে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, এ প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মচারী চরম বৈষম্যের শিকার হবেন। একই বেতন স্কেলের আওতাধীন কর্মচারীদের জন্য ভিন্ননীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বায়ত্তশাসন দিয়ে শিক্ষা ও গবেষণাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের সমর্থন করতে গিয়ে ১৯৪৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হন ও কারাবরণ করেন।

এছাড়া কর্মচারীদের প্রতি এ বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের ফলে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার উন্নত রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে। কেননা, এর ফলে যোগ্য ও দক্ষ জনবল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চাকরি করতে আগ্রহী হবেন না।

Advertisement

আরও পড়ুন

বৈষম্যমূলক পেনশন প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার দাবিতে শিক্ষকদের কর্মবিরতি

কর্মচারী নেতারা আরও বলেন, এ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মচারীদের সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দুরভিসন্ধি রয়েছে কি না সেটা ভেবে দেখা দরকার। যে মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চারবার ক্ষমতায় এসে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের কর্মচারী সমাজও তার উন্নয়ন যাত্রায় বিপুল-উৎসাহ নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে বিদ্যমান সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে আমাদের আন্দোলনের পথে ঠেলে দেওয়ার পুরোনো কৌশল শুরু হয়েছে বলে আমরা মনে করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা অনতিবিলম্বে এ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে কর্মচারী সমাজের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা ও অসন্তুষ্টি লাঘবের এবং নবম জাতীয় বেতন স্কেলের দাবি জানাচ্ছে।

এ সময় অবিলম্বে দাবি না মানা হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন কর্মচারী নেতারা।

এমএইচএ/এমএএইচ/জিকেএস