কর্ণফুলী নদী দখল করে জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির স্থাপিত মাছ বাজার এলাকাটি নদীর জায়গা হিসেবে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
বুধবার (২৯ মে) এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে দেওয়া রায়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি এ কে এম জাহিদ সরওয়ারের আদালত এ আদেশ দেন।
রিটে পক্ষভুক্ত বিবাদী হিউম্যান রাইট অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আদালত জায়গাটি নদী হিসেবে সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছেন তাই জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে জায়গা থেকে সরে যেতে হবে।’
Advertisement
‘আদালত আরও বলেছেন, ওই জায়গার মালিকানা নিয়ে পোর্ট অথরিটি নিম্ন আদালতে যে মামলা করেছে সেই জায়গার মালিকানা সংক্রান্ত বিষয় আইন অনুযায়ী আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।’
আরও পড়ুন
দখল আর দূষণে মৃতপ্রায় কর্ণফুলীরিটকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট সারাওয়ার আহমেদ ও সাঈদ আহমেদ রাজা, পোর্ট অথরিটির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও সরকারের পক্ষে ছিলেন ডিআইজি বিপুল বাগমার।
২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কর্ণফুলী নদীর চাক্তাই–রাজাখালী খালের মোহনার জায়গা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরিকারী ৪৭ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে উচ্ছেদ নোটিশকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা ৭২০/২০২১ দায়ের করেন জাতীয় মৎসজীবী সমিতি। আদালত রিট মামলায় রুল জারি করে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। পরে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের আদালত জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির দায়ের করা রিটটি ২০২৩ সালের মার্চে খারিজ করে দেন।
Advertisement
এরপর জাতীয় মৎসজীবী সমিতি হাইকোর্টে আরেকটি রিট পিটিশন ২৪০২/২০২৩ দায়ের করে এবং স্থিতাবস্থার আদেশ অর্জন করেন। বিষয়টি এইচআরপিবির নজরে এলে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রিট মামলায় পক্ষ হওয়ার আবেদন করেন। যা আদালত মঞ্জুর করেন।
গত মার্চ থেকে দীর্ঘ দুই মাস মামলাটি একাধিকবার বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি এ কে এম জাহিদ সরওয়ারের আদালতে রিটের শুনানি হয়।
শুনানিতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আদালতকে বলেন, ‘যে জায়গায় রিট পিটিশনার ফিশারি ঘাট তৈরি করেছেন সেই জায়গাটি কর্ণফুলী নদীর। ২০১৬ সালে এইচআরপিবি জনস্বার্থ মামলায় হাইকোর্ট নদীর জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন এবং হাইকোর্টের নির্দেশে জরিপে ৮৬৫১ দাগটি নদী হিসাবে চিহ্নিত। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ নদীর জায়গা ভরাট করে ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের জন্য জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে লিজ দেয়। এ সময় নদীর জায়গা নদী হিসাবে সংরক্ষণের আদেশও প্রার্থনা করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘এ ধরনের লিজ সম্পূর্ণ অবৈধ, কারণ আপিল বিভাগের রায়ে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে ব্যবসায়িক কারণে নদীর জায়গা লিজ দেওয়া যাবে না।’
এএজেড/এমআরএম/এএসএম