দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৫ মাস পার হলেও এতে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও দলগুলোর নির্বাচনী আয়-ব্যয়ের বিবরণী প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এ বিবরণী জমা না দেওয়াসহ এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
Advertisement
বুধবার (২৯ মে) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, এ গোপনীয়তার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী আইন অমান্য করেছে। অন্যদিকে যেসব প্রার্থী ও দল যথাসময়ে তথ্য জমা দেয়নি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা কমিশন গ্রহণ করেছে-এমন তথ্য নেই। যা একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রত্যাশিত নয়। অবিলম্বে নির্বাচনীয় ব্যয় সংক্রান্ত সব তথ্য উন্মুক্ত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
টিআইবি জানায়, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়। সে হিসেবে প্রার্থীদের ব্যয় বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৭ ফেব্রুয়ারি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ছিল ৭ এপ্রিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে অধিকাংশ প্রার্থীই ও রাজনৈতিক দল ব্যয় বিবরণীর সত্যায়িত নথি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসে জমা দেয়নি। নির্বাচন কমিশনও তথ্য জমা দিতে ব্যর্থ প্রার্থী ও দলের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেননি।
নির্বাচনী ব্যয়সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ ও প্রকাশে নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনী ব্যয়সংক্রান্ত আইনি বাধ্যবাধকতাকে প্রার্থী-দল এমনকি নির্বাচন কমিশনও রীতিমতো উপেক্ষা করেছে। নির্ধারিত সময়ে ব্যয় বিবরণী জমা দিতে প্রার্থী এবং দলসমূহ অনীহা দেখিয়েছে, আবার সময়সীমা পার হলেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আইনানুগ কোনো প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
Advertisement
নির্বাচনী আইন মেনে চলতে ব্যর্থ প্রার্থী ও দলসমূহের জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের জানিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে এক দিকে যেমন কমিশনের নির্বাচনী আইনকে উপেক্ষা করার দৃষ্টান্ত যেমন হতাশাজনক, অন্যদিকে এ নিষ্ক্রিতার মাধ্যমে কমিশন বাস্তবে প্রার্থী ও দলসমূহকে আইনের লঙ্ঘনে আরও বেশি উৎসাহিত করেছে, যা নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের জন্য বিব্রতকর।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এটি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ দ্বারা নির্ধারিত আইনগত বাধ্যবাধকতার এমন লঙ্ঘন যা নাগরিকদের প্রয়োজনীয় তথ্য থেকে বঞ্চিত করছে, জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পথ বন্ধ করছে যা গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিতে প্রতিবন্ধকতা গভীরতর ও ব্যাপকতর করছে। কমিশন নির্বাচনের ব্যয় সংক্রান্ত তথ্যদানে গোপনীয়তা রক্ষা করছে এবং উত্তম চর্চার উল্টো পথে চলছে। প্রার্থী এবং দলগুলোর ওপর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিতে অবিলম্বে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী এবং দলসমূহের নির্বাচনী ব্যয়সংক্রান্ত সব তথ্য সংগ্রহ নিশ্চিত করে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করতে নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানাই।
যেসব প্রার্থী এবং রাজনৈতিক দল নির্বাচনী ব্যয় বিবরণী নির্ধারিত সময়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সঠিক দৃষ্টান্ত স্থাপনের দায়িত্ব সম্পর্কে আমরা আরেকবার নির্বাচন কমিশনকে মনে করিয়ে দিতে চাই।
এসএম/এমআইএইচএস/জিকেএস
Advertisement